তোলাবাজ ভাইপো হঠাও, বিজেপিতে যোগ দিয়েই স্লোগান শুভেন্দুর
যেমনটা মনে করা হয়েছিল ঠিক সেটাই হল। বিজেপিতে যোগ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর বিজেপির পতাকা হাতে তুলেই তিনি স্লোগান তুললেন, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।
কলকাতা : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করতে অন্তত প্রথম সভায় তাঁকে দেখা গেলনা। বিজেপির পতাকা অমিত শাহর হাত থেকে তুলে নিয়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
মেদিনীপুরের জনসভায় এদিন বিশাল জন সমাবেশে বিজেপি নেতা হিসাবে তাঁর প্রথম বক্তৃতায় শুভেন্দু কিন্তু সরাসরি ‘ভাইপো হঠাও’- এর ডাক দিলেন। সরাসরি তোলাবাজ বলেও সম্বোধন করেন তিনি। নাম না করে ভাইপো বলতে বিজেপি যাঁকে ইঙ্গিত করে থাকে, শুভেন্দুও যে তাঁকেই ইঙ্গিত করলেন তা এই সভায় উপস্থিত সকলের কাছেই পরিস্কার ছিল।
তবে তিনি এটাও বলেছেন যে একমাত্র ভারতমাতাকেই তিনি মা বলে সম্বোধন করতে পারবেন। আর কাউকে মা বলতে পারবেননা। রাজনৈতিক মহলের ধারণা এখানেই তিনি প্রচ্ছন্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যা বলার বলেছেন।
শনিবার মেদিনীপুরের জনসভায় অমিত শাহর উপস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীর মত হেভিওয়েট নেতা সহ বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল বিজেপিতে যোগ দেন। যোগ দেন অনেক তৃণমূল বিধায়ক ও নেতা।
এছাড়াও এদিনের সভামঞ্চে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন কংগ্রেস ও সিপিএম থেকে আসা কয়েকজন নেতা। যা অবশ্যই এ রাজ্যে দাঁড়িয়ে বিজেপির জন্য এক অন্যতম সফল দিন। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূলে এতবড় ভাঙন কিন্তু বড় ধাক্কা হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিন শুভেন্দু তাঁর বক্তব্যে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি ২১ বছর দল করলেও সেই সম্মান ও মর্যাদা তৃণমূলে পাননি। তাঁর যখন করোনা ধরা পড়ে তখন তাঁর দলের কেউ তাঁর খোঁজ নেননি। কিন্তু অমিত শাহ তাঁর খোঁজ নিয়েছিলেন। অমিত শাহকে একাধিকবার তিনি দাদা সম্বোধন করেন।
মঞ্চে ২ বার অমিত শাহকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করতে দেখা যায় শুভেন্দুকে। তিনি বলেন মুকুল রায় তাঁকে জানিয়েছিলেন দলে সম্মান না পেলে তিনি বিজেপিতে চলে আসতে পারেন। সব মিলিয়ে তিনি যে এখন তাঁর এলাকায় বিজেপির জন্য জোরকদমে কাজ করবেন তাও এদিন স্পষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন শুভেন্দু।
এদিন হাতে হাত ধরে অমিত শাহর সঙ্গে বিজেপির মঞ্চ ভাগ করে নেন শুভেন্দু সহ অন্যান্য নেতারা। এদিন মঞ্চে লক্ষণীয় ছিল যে সভায় উপস্থিত নেতাদের সিংহভাগই ছিলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া নেতৃবর্গ।
শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও দেখা গেছে, অর্জুন সিং, সৌমিত্র খাঁ, সব্যসাচী দত্ত, মুকুল রায়ের মত নেতাদের। এমনকি শঙ্কুদেব পণ্ডাকেও দেখা গেছে মঞ্চে। তুলনায় বরং বঙ্গে শুরু থেকেই বিজেপি করা নেতাদের সংখ্যা ছিল কম।