পারদ চড়ছিল বিকেল থেকেই। অমিত শাহ-র রোড শো যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যাবে তা তো জানাই ছিল। অমিত শাহ যখন তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে পাস করবেন তখন তাঁকে গো-ব্যাক ধ্বনি দেওয়ার জন্য তৈরি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ছাত্ররা। কালো পতাকাও তৈরি ছিল। স্লোগান চলছিল অনেক আগে থেকেই। এদিকে অমিত শাহ-র রোড শো ঘিরে অনেক আগে থেকেই কলেজ স্ট্রিট চত্বর চলে গিয়েছিল বিজেপির দখলে। কমলা রঙের বেলুনে, গাঁদার পাপড়িতে, উচ্ছ্বাস-উল্লাসে বিজেপি কর্মীরা হৈহৈ করছিলেন ট্রাম লাইনের ওপর। আর এই পরিস্থিতিতে যাতে দুপক্ষে তুলকালাম শুরু না হয় সেজন্য মাঝে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা।
অমিত শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছনোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থেকে ভেসে আসা গো-ব্যাক ধ্বনি, স্লোগানের শব্দ রোখার জন্য প্রবল শব্দে ডিজে বাজানো শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। যাতে অমিত শাহকে কালো পতাকা না দেখানো যায় তার জন্য বিজেপির বড় বড় ব্যানার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেটা ঢেকে দেওয়া দেন বিজেপি কর্মীরাই। মাঝে মধ্যে বিজেপি কর্মীদের তরফ থেকে কয়েকটা জলের বোতল ও ইট উড়ে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে। কিন্তু অবস্থা তেমন কোনও জটিল আকার নেয়নি।
জটিল আকার নিল অমিত শাহ সন্ধে ৬টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে দিয়ে পাস করার সময়। একদিকে তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থেকে টিএমসিপি ছাত্রছাত্রীরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন অমিত শাহকে কালো পতাকা দেখাতে। তাঁর কান পর্যন্ত গো-ব্যাক ধ্বনি পৌঁছে দিতে। অন্যদিকে রাস্তা থেকে তাঁদের দিকে ক্রমশ লাঠি, লোহার রড, ইট, জলের বোতল ছুঁড়ছেন বিজেপি কর্মীরা। সে এক তুলকালাম পরিস্থিতি। পুলিশ কার্যত হিমসিম খেতে থাকে অবস্থা সামাল দিতে। এরমধ্যেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থেকে ছাত্রছাত্রীরা যেমন বেরিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন, ঠিক তেমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা পুলিশের দিকে গার্ড রেল ঠেলে, ছুঁড়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালাতে থাকেন। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ করে দিয়ে অবস্থা সামাল দেওযার চেষ্টা চালায়।
এই তুলকালাম যখন চলছে ঠিক তখনই অমিত শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পার করেন। তাঁর গাড়ি অনেকটা এগিয়ে গেলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনের প্রবল উত্তেজনা অনেকটা ঠান্ডা হয়। কিন্তু তখনও গেটের সামনে উলঢাল হয়ে পড়ে আছে কলকাতা পুলিশের গার্ড রেল, লাঠি, বোতল।