সুনামি হল নদীর ধারে, তবে জলের সুনামি নয়
সুনামি উঠল বটে। ধরা পড়ল ক্যামেরাতেও। কিন্তু এ সুনামি হল নদীর পারে। আর তা জলে তৈরি হল না, বরং অন্য কিছুর সুনামি হল বালির ওপর।
মানাউশ (ব্রাজিল) : বয়ে গেছে বিশাল নদী। তার ২ পারে বালির তট। সেই বালির তটে এবার সুনামির ঢেউ উঠল। তবে এই ঢেউ জল দিয়ে তৈরি হল না। বরং তৈরি হল কচ্ছপ দিয়ে।
একসঙ্গে ৭১ হাজারের ওপর কচ্ছপ যদি নদীর পার ধরে বালির ওপর ছুটতে থাকে তবে তাকে কচ্ছপের সুনামি না বলে আর কিই বা বলা যেতে পারে! এই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপের সুনামি ক্যামেরাবন্দিও হয়েছে।
ব্রাজিলের সর্ববৃহৎ নদী অ্যামাজন। রহস্যে ঘেরা এই নদীর শাখানদী পুরুস নদী। এই পুরুস নদীও নেহাত কম যায়না। বিশাল নদীর ২ ধারে বালির তট। সেই বালির তটের ওপর দেখা গেল জায়ান্ট সাউথ অ্যামেরিকান রিভার টার্টল-দের এই মিলন উৎসব। এই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপরা হ্যাচলিংস নামে পরিচিত।
হ্যাচলিংস কচ্ছপ কিন্তু খাতায় কলমে একটি লুপ্তপ্রায় কচ্ছপের প্রজাতি। এই কচ্ছপগুলি বিশাল আকৃতির হয়ে থাকে। এমনিতেই অ্যামাজনের আশপাশে যে কোনও প্রাণিই চেহারায় বৃহৎ।
এই কচ্ছপগুলি প্রায় সাড়ে ৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ওজন হয় ৯০ কেজি পর্যন্ত। সাধারণত এরা নিজেদের প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখতে অনেক সময় একসঙ্গে প্রচুর ডিম পাড়ে। আর তা থেকে প্রচুর কচ্ছপের জন্ম হয়।
এই কচ্ছপ এত দেখা যাচ্ছে, তবু এই প্রাণি লুপ্তপ্রায় কেন, এ প্রশ্ন জাগতেই পারে। প্রকৃতিবিদরা জানাচ্ছেন, আসলে এই কচ্ছপ লুকিয়ে পাকড়াও করা হয়। এর ডিম হোক বা এর মাংস, দুয়ের চাহিদা যথেষ্ট। তাই লুকিয়ে এই কচ্ছপ শিকার করে এর মাংস বেচা হয়ে থাকে। এর ডিমও বিক্রি হয়।
এই ডিম ও মাংসের চাহিদাই এদের ক্রমশে লুপ্তপ্রায় করে তুলেছে। তবে শেষ কদিনে এই কচ্ছপের দেখা মিলেছে পুরুস নদীর ধারে। এক আধটা নয়, সংখ্যায় প্রচুর কচ্ছপের দেখা মিলেছে। যা অবশ্যই সুখের কথা বলে মেনে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
এরা যাতে প্রকৃতির বুকে তাদের মত করে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করাই এখন বন বিভাগের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এই এত সংখ্যক হ্যাচলিংসের দেখা পাওয়ার খবর চোরাশিকারিদের নজরও এড়াবে না। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা