বাড়িতেই শুরু হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। ফলে তিনি না চাইলেও আর ঝুঁকি নিতে পারেননি তাঁর স্ত্রী ও কন্যা। দ্রুত তাঁকে উডল্যান্ডস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঘড়িতে তখন রাত সওয়া ৮টা। সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম। হাসপাতালে ভর্তি করার পরই তাঁর দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়। যখন আনা হয় তখন পরিস্থিতি যথেষ্ট খারাপ ছিল। রক্তচাপ ৬০ বাই ৪০ হয়ে গিয়েছিল। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও ছিল যথেষ্ট কম। তবে চিকিৎসকেরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় চিকিৎসায় সাড়া দিতে থাকেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌনে ৯টায় হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাজির হন সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, রবীন দেবরা।
মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ১ ঘণ্টা হাসপাতালে ছিলেন। তিনি বেরিয়ে জানান, বুদ্ধদেববাবু অনেকটা সুস্থ হয়েছেন। চিকিৎসাজনিত বিষয়ে তিনি কিছু বলতে না চাইলেও জানান বুদ্ধদেববাবুকে ৩-৪ বোতল রক্ত দিতে হবে। তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এও জানান যে তিনি যখন বেরিয়ে আসছেন তখন তিনি এও জানতে পেরেছেন বুদ্ধদেববাবু উঠে বসেছেন। কথাও বলছেন।
চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তৈরি ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে বুদ্ধদেববাবুর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তাঁর শরীরে অক্সিজেন স্তর বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের তরফেও জানানো হয়, বুদ্ধবাবু ভাল আছেন। ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিনের সিওপিডি-র রোগী। ফলে তাঁর ফুসফুসের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, জেনারেল মেডিসিন ও চেস্ট বিশেষজ্ঞরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। রাতে এগুলি জানালেও হাসপাতাল জানিয়ে দেয় তারা বুদ্ধদেববাবুর শারীরিক অবস্থার আপডেট ফের সকালে দেবেন।
মহম্মদ সেলিম প্রথম থেকেই হাসপাতালে ছিলেন। তিনি জানান, বুদ্ধদেববাবু কোনও সুবিধা নিতে ভালবাসেন না। কারও কাছ থেকে নয়। তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা চালাতে চাইতেন। কিন্তু তাঁর দল তাঁর একটা স্বাস্থ্য পরীক্ষা হোক তা চাইছে। দলই হাসপাতালের খরচ বহন করবে। পাশাপাশি সেলিম আরও বলেন, কিছু মিডিয়ায় তাঁকে সংকটজনক বলে দেখানো হচ্ছে। তা নয়। কোনও গুজব ছড়াতে মানা করেন সিপিএমের এই বর্ষীয়ান নেতা। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বুদ্ধদেববাবু ভাল আছেন। তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। সকলেই চাইছেন তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।