চলে গেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, এক অধ্যায়ের সমাপ্তি
এক বর্ণোজ্জ্বল রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি হল। চলে গেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন তিনি।
ভোররাত থেকেই শ্বাসের সমস্যাটা বেড়েছিল। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যাকে সামাল দেওয়া সম্ভবও হয়েছিল। সকালে প্রাতরাশও করেন। কিন্তু তার পরেই ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাম জামানার এই অবিস্মরণীয় কাণ্ডারি। ৮০ বছরে তাঁর জীবনাবসান হল। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর দেহ দান করে গেছেন। ফলে তাঁর প্রথা মাফিক সৎকার হবেনা।
দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। একাধিকবার তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়। তবে সে লড়াই জিতে ফিরে আসেন নিজের বাড়িতে। এমনকি ২০২১ সালে করোনা আক্রান্ত হলেও সেই লড়াইও জিতে ফেরেন বুদ্ধদেব।
বাড়িতেই থাকতে পছন্দ করতেন। সেই বাড়িতেই তাঁর জীবনাবসান হল। খবর পেয়ে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি। একে একে হাজির হতে থাকেন বাম নেতারাও। বাড়তে থাকে ভিড়। বাংলার বাম রাজনীতির এক মহীরুহ ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
২০০০ সালে মুখ্যমন্ত্রী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনিই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১ সালে হয় পালা বদল। ৩৪ বছরের বাম শাসনের পর মুখ্যমন্ত্রী হন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর থেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অংশগ্রহণ কমতে থাকে।
১৯৪৪ সালে উত্তর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পড়াশোনাও উত্তর কলকাতার শৈলেন্দ্র সরকার স্কুলে। পরে প্রেসিডেন্সি কলেজে বাংলা নিয়ে পড়াশোনা।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বাম মনষ্ক পরিবারেই বড় হয়ে ওঠেন। বাম ছাত্র রাজনীতিতে অবশ্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেভাবে যুক্ত ছিলেননা। পরবর্তীকালে বাম রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন।
সংস্কৃতি মনষ্ক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রথমে বাম পত্রপত্রিকার দায়িত্ব সামলাতেন। তারপর নির্বাচনী রাজনীতিতে তাঁর পা দেওয়া। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বাম শাসনের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। দেখতেন রাজ্যে শিল্পায়নের স্বপ্ন। দীর্ঘ বর্ণময় এবং কর্মময় এক বটবৃক্ষের পথচলা শেষ হল বৃহস্পতিবার।