পান খাওয়ার মজলিসি আমেজকে মৃত্যুশয্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে ঘড়ির কাঁটা
খাওয়ার পর একটা পান মুখের মধ্যে পুরে চিবোতে থাকার আনন্দই আলাদা। কিন্তু ক্রমে সেই পানের যাদুকে মৃত্যুশয্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে ঘড়ির কাঁটা।
একটা সময় ছিল যখন ঘরে ঘরে পানের বাটা থাকত। পানের বাটায় সাজানো থাকত চুন, খয়ের, সুপুরি সহ পান খাওয়ার অন্য মশলা। এমনকি অনেকে পানের সঙ্গে দোক্তা বা জর্দাও মিশিয়ে মুখে পুরে দিতেন।
বাড়িতে পানের বাটা থাকার একটা অন্যতম কারণ ছিল দৈনিক ব্যবহার। প্রতিদিন একাধিকবার পান খাওয়ার অভ্যাস থাকলে কত আর কিনে খাওয়া যায়! তাই পান পাতা বাজার থেকে এনে তা মনের মত করে সেজে নেওয়ার প্রচলন ছিল অনেক পরিবারে।
সেই প্রবণতা নতুন প্রজন্মের মধ্যে আর নেই। তবে পানের দোকান থেকে পান খাওয়াটা বজায় ছিল। এখনও আছে। কিন্তু সেখানে এখন ভাটার টান।
পানের অনেক দোকানেই পান সাজিয়ে বসেও দিনের শেষে আগের মত খদ্দের হচ্ছেনা। ফলে ব্যবসাতেও ভাটার টান। পানের দোকানিদের তাই মন খারাপ। পান সাজার বন্দোবস্ত রেখেও তাঁরা দোকানে বাধ্য হয়ে সাজিয়ে রাখছেন পান মশলার প্যাকেট।
নবাবের শহর লখনউ আবার এ দেশের পান বিলাসের জন্য বিখ্যাত। নবাবি শহরে ঘরে ঘরে পান খাওয়ার রেওয়াজ আজকের নয়। তবে সেখানেও এখন পানের দোকানিরা মাছি তাড়াচ্ছেন।
দিনের শেষে হাতে গোনা খরিদ্দার আসছেন পান কিনতে। কিন্তু কেন এমন অবস্থা? পানের দোকানিরা পান মুখে পোরার আনন্দে এই অনিচ্ছার জন্য কাঠগড়ায় চাপাচ্ছেন সময়কে।
তাঁদের মতে, মানুষ এখন সময়ের পিছনে ছুটছেন। আর সেখানেই যত সমস্যা। একটা পান ভাল করে সেজে দিতে মিনিট তিনেক সময় লাগে। সেই সময়টা কারও হাতে নেই।
দোকানে এসে খরিদ্দাররা তাই পান কেনার বদলে পান মশলা কিনে নিচ্ছেন। একটা প্যাকেট কিনতে ১ মিনিটও খরচ করতে হচ্ছেনা। ফলে পানের দোকান খুলেও বিক্রি করতে হচ্ছে পান মশলার প্যাকেট। সময় কেড়ে নিয়েছে পান মুখে পুরে চিবোনোর মজলিসি আমেজ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা