বাংলার ফলের চারায় মুনাফা ঘরে তুললেন অন্য রাজ্যের কৃষকরা
ফলের চারাটা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ থেকে। আর সেই চারার কামাল এখন দেখছেন অন্য রাজ্যের কৃষকরা। মোটা টাকা মুনাফা ঘরে তুলতে পারছেন তাঁরা।
লখনউ : ৪ বছর আগের কথা। পরিবারের যা জমিজমা আছে সেখানে চাষাবাদ করে সে অর্থ ঘরে আসছিল না যা দিয়ে সংসার চলতে পারে। তাই পরিবারের যুবক সদস্য রাম সকল যাদব বাক্স পেঁটরা গুছিয়ে ফেলেন। পরিবার চালাতে স্থির করেন তিনি মুম্বই যাবেন। সেখানেই চেষ্টা করবেন কোনও স্থায়ী উপার্জনের ব্যবস্থা করতে। যাতে পরিবারের পেট চলতে সমস্যা না হয়। সে সময় তাঁকে মুম্বই যাওয়া থেকে আটকান তাঁর জেলার জেলাশাসক।
উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বীর বাসিন্দা রাম সকল যাদবকে তিনি সেখানেই থেকে এক বিশেষ ফলের চাষে উৎসাহ দেন। তিনিই পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওই ফলের চারা আনিয়ে দেন রাম সকলের জন্য।
দেখা যা কী হয় এমন একটা মন নিয়ে জেলাশাসকের উপদেশে রাম সকল নিজের জমিতে ওই ফলের চাষ শুরু করেন। আর সেই চারা বড় হয়ে তাতে ১৮ মাস পর যখন ফল পাকে তখন সেই ফল দিল্লি ও মুম্বইতে পাঠিয়ে যে অর্থের মুখ দেখেন রাম সকল যাদব তাতে তিনি আর কোথাও না গিয়ে তাঁর জমিতে কেবল ওই ফলের চাষ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ড্রাগন ফ্রুট নামে ওই ফল যে এতটা লাভদায়ক হতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেননি রাম সকল যাদব। তাঁর মুনাফা দেখে স্থানীয় অন্য কৃষকরাও শুরু করে দেন এই ড্রাগন ফলের চাষ।
এই ফলের গাছ খুব শক্তপোক্ত নয়। ফলে তাকে ধরে রাখতে গাছের পাশে কাঠের তক্তা দিতে হয়। খরচ ওইটুকুই। কাঠের তক্তার খরচ। বাকি এই ফল চাষের জন্য আলাদা করে যত্নের দরকার পড়ে না। আবার এই ফলের গায়ে থাকা কাঁটার জন্য এই ফল খেতে পাখি বা অন্য কোনও জন্তু উপদ্রব করে না।
ফল চাষে বিশেষ যত্নের দরকার নেই, কেবল ১৮ মাস পর এই গাছে ফল আসে। একটি গাছে ৬০ থেকে ১২০টি ড্রাগন ফল হয়। স্থানীয় ভাষায় তার নাম দেগান ফল।
এই ফলের চাহিদা দিল্লি, মুম্বই সহ বড় শহরগুলিতে যথেষ্ট। দামও অনেক। সাড়ে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ফলে ড্রাগন ফল চাষে মুনাফাও অনেক। যা হাসি ফুটিয়েছে গোটা এলাকার কৃষকদের মুখে।
ড্রাগন ফলের চাহিদা বেশি তার কারণ তার গুণাগুণ। এই ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারি। এছাড়া হাঁপানির রোগীদের ক্ষেত্রেও এর উপকারিতা অনেক। ড্রাগন ফলে অ্যান্টি-এজিং এবং অ্যান্টি-ক্যানসার উপাদান রয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই এই ফলের চাহিদা রয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা