১৯০ টাকার ল্যাপটপে ৪৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন যুবক
১৯০ টাকায় ল্যাপটপ কিনলেও তা হাতে পেলেননা বটে, তবে তার বদলে ক্ষতিপূরণ বাবদ জুটল ৪৫ হাজার টাকা। একদম আদালতের নির্দেশে এই টাকা পেলেন এক যুবক।
নয়াদিল্লি : অনলাইন সাইটে নানা আকর্ষণীয় অফার পাওয়া যায়। এমনই এক দুরন্ত অফার দিয়েছিল বিখ্যাত ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন। যেখান থেকে বহু মানুষই তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে থাকেন।
২০১৪ সালে সেই অ্যামাজনেই একটি অফার এক যুবকের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ১৯০ টাকায় ল্যাপটপ কেনার হাতছানি ছিল অ্যামাজনে। এই সুযোগ ছাড়েননি ওই যুবক।
২০১৪ সালে আইনের ছাত্র সুপ্রিয় রঞ্জন মহাপাত্র অ্যামাজনে ওই ল্যাপটপটি অর্ডার দেন, যেটির মূল দাম ছিল ২৩,৪৯৯ টাকা, কিন্তু তা অফারে পাওয়া যাচ্ছিল শুধুমাত্র ১৯০ টাকায়। স্বভাবতই এমন লোভনীয় একটি অফার হাতছাড়া করেননি সুপ্রিয়। কিন্তু অর্ডার দেওয়ার পরই হল বিপত্তি।
অর্ডার দেওয়ার ২ ঘণ্টা পরেই অ্যামাজনের কাস্টমার সার্ভিস থেকে তাঁর সাথে যোগাযোগ করে জানানো হয় বাজার মন্দার কারণে তাঁর অর্ডারটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হন ওই ক্রেতা এবং তিনি অ্যামাজনকে আইনি চিঠি পাঠান। কিন্তু অ্যামাজন সেই চিঠির কোনও উত্তর দেয়নি বলেই দাবি করেন সুপ্রিয়।
ফলে বাধ্য হয়ে সুপ্রিয় অ্যামাজনের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ব্যবসা করার জন্য ওড়িশার রাজ্য উপভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে একটি মামলা করে মানসিক হয়রানির জন্য ৫০ হাজার টাকা ও আইনি খরচের মাশুল হিসেবে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। মামলার রায় বের হতে দেরি হলেও তা ওই আইনের ছাত্রের পক্ষেই গেল।
অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ আত্মপক্ষ সমর্থন করে কমিশনকে জানায়, তাদের প্ল্যাটফর্মে এক থার্ড পার্টি বিক্রেতা ও ক্রেতার মধ্যে এই কেনাবেচার প্রক্রিয়াটি হয়েছিল। অ্যামাজন তাদের চুক্তির অংশ ছিলনা। কিন্তু কমিশন জানায় অ্যামাজনের এই কথা যুক্তিহীন। তাদের মতে, ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল তা অ্যামাজনের কাছে গোপন ছিল না।
যখন অ্যামাজনের মতো বিখ্যাত অনলাইন পণ্য বিক্রয়কারী সংস্থায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল ওই অফারটির জন্য ও মজুত থাকা ল্যাপটপের সংখ্যা দেখে যখন তারা অর্ডারটি নিশ্চিত করেছিল তখনই ২ পক্ষের মধ্যে সব চুক্তি সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। তাই চুক্তির কথা এক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক।
কমিশন অ্যামাজনকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করে। ৩০ হাজার টাকা মানসিক হয়রানির জন্য, ১০ হাজার টাকা শাস্তিমূলক খাতে ও ৫ হাজার টাকা আইনি খরচখরচা বাবদ সুপ্রিয় রঞ্জন মহাপাত্রকে অ্যামাজনের পক্ষ থেকে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন।
১৯০ টাকায় ল্যাপটপ না পেলেও ক্ষতিপূরণ স্বরূপ ৪৫ হাজার টাকা পেয়ে লাভবানই হলেন ওই ক্রেতা। আর সেইসঙ্গে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন যে যদি বিক্রেতার দিক থেকে কোনও অন্যায় থাকে তাহলে তা মুখ বুজে মেনে না নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে যেন ক্রেতা অবশ্যই ন্যায় চেয়ে আবেদন জানান। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা