Business

জিএসটি সরলীকরণ ও ব্যবসায়ীদের সামাজিক সুরক্ষায় জোর দেওয়া হোক বাজেটে, প্রত্যাশা এফটিও-র

বাজেট সামনে। আর বাজেট মানেই সাধারণ মানুষ থেকে শিল্পপতি, স্বনিযুক্ত ব্যবসায়ী থেকে ছোট দোকানদার, সকলের মধ্যে থাকে অধীর অপেক্ষা। বাজেট তাদের জন্য কী সুখবর শোনায় তার অপেক্ষায় থাকেন সকলেই। পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ ব্যবসায়ী সংগঠন এফটিও বা ফেডারেশন অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশনস। যাঁদের সদস্য ছড়িয়ে আছে রাজ্যের সবকোণায়। সেই এফটিও এবার কী চাইছে বাজেট থেকে? কি তাদের বাজেট প্রত্যাশা? কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাজেটের মুখে এফটিও-র সম্পাদক তারকনাথ ত্রিবেদী জানালেন তাঁদের প্রত্যাশার কথা।

জিএসটি আসার পর নানা করের হ্যাপা আর নেই। কিন্তু জিএসটি-র বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন তাঁরা। জিএসটি চালু হওয়ার পর তার নিয়মকানুন সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। তারকবাবুর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন জিএসটি যখন লাগু হয়েই গেছে তখন তার নিয়মকানুন কিছুটা সরলীকরণ করা হোক। বাজেটে জিএসটি সরলীকরণই তাঁদের প্রধান চাহিদা। এছাড়া জিএসটি কম্পোজিশন স্কিমে যেসব ছোট ব্যবসায়ীরা রয়েছেন, তাঁদের খরচ বেড়েছে। কারণ তাঁরা যখন তাঁদের বিক্রয়ের পণ্যটি কিনছেন, তখন তাঁদের সেই পণ্যের ওপর থাকা জিএসটি দিয়েই তা কিনতে হচ্ছে। কিন্তু যখন বিক্রি করতে যাচ্ছেন তখন ক্রেতার কাছ থেকে সেই জিএসটি-র জন্য ব্যয় করা টাকা আদায় করতে পারছেন না। কারণ তাঁরা কম্পোজিশন স্কিমের আওতাভুক্ত। তাই ক্রেতার কাছ থেকে জিএসটি নিতে তাঁরা অপারগ। এতে তাঁদের পারচেজিং কস্ট বেড়ে যাচ্ছে। তার ওপর বাড়তি ১ শতাংশ টার্নওভার করও প্রদান করতে হচ্ছে তাঁদের। এই দুই বাড়তি ব্যয়ভার তাঁদের স্বল্প রোজগারের থেকেও একটা বড় অংশের টাকা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টি সরকার যেন সহানুভূতির সঙ্গে ভেবে দেখেন, সেই আবেদন শোনা গেছে তারকবাবুর গলায়।


এছাড়া তাঁর দাবি কম্পোজিশন স্কিমে যেসব ব্যবসায়ী রয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই কম্পিউটার সম্বন্ধে জ্ঞান নেই। তাঁরা সাধারণ দোকানদার মাত্র। অথচ জিএসটিতে কম্পিউটারের মাধ্যমে অনেক হিসাব ও খতিয়ান সরকারের ঘরে দাখিল করতে হয়। ফলে তাঁদের নতুন করে লোক নিতে হচ্ছে। যাতে তাঁদের ‘বিজনেস কস্ট’ বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া এফটিও তরফে তারকবাবু এদিন খুচরো ব্যবসায় ১০০ শতাংশ এফডিআইয়ের কড়া ভাষায় বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের দাবি এভাবে চলতে থাকলে একসময়ে ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

তারকবাবু এদিন তাঁর সংগঠনের তরফে আরও একটি বাজেট প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তাঁর মতে, বাজেটে ব্যবসায়ীদের সামাজিক সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া হোক। উদাহরণ দিতে গিয়ে তারকবাবু বলেন, অনেক দেশে কোনও ব্যবসায়ীর ব্যবসা কোনও কারণে বন্ধ হয়ে গেলে তাঁকে সরকার থেকে সাহায্য করা হয়। যাতে তাঁর পরিবার ব্যবসা বন্ধের কারণে সমস্যায় না পড়ে। পাশাপাশি তিনি ফের যাতে তাঁর ব্যবসা চালু করতে সমর্থ হন, তারজন্য আর্থিক সাহায্যও আসে সরকারের কাছ থেকে। এই ব্যবস্থা ভারতে সেভাবে নেই। তাই অবিলম্বে ব্যবসায়ীদের সামাজিক সুরক্ষায় জোর দেওয়ার অবেদন জানিয়েছেন তিনি।


বাজেটে সাধারণ মানুষকে আয়করে অন্তত ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড়ের প্রস্তাব রেখেছে এফটিও। সিনিয়র সিটিজেনদের ক্ষেত্রে তা ৫ লক্ষ। এফটিও-র দাবি, মানুষের হাতে টাকা থাকলে তবেই না তাঁরা অন্যত্র টাকা খরচ করার মত শক্তি পাবেন। সেকথা মাথায় রেখে সাধারণ মানুষকে কিছুটা ছাড় দেওয়ার আবেদন জানান তারকনাথ ত্রিবেদী।

কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাঁর এসব আবেদন থাকলেও রাজ্য বাজেটে অর্থ দফতরের কাছ থেকে তেমন কিছু চাহিদা নেই তাঁদের। কারণ হিসাবে তারকবাবুর দাবি, রাজ্যের হাত থেকে সব বেরিয়ে গেছে। খোদ করের ক্ষেত্রেই রাজ্যের হাত-পা বাঁধা হয়ে গেছে। তাই রাজ্য সরকারের তেমন কিছু করার নেই বলেই মনে করেন তিনি।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button