Kolkata

বিচারপর্ব ছাড়াই ৪১ বছর জেলে, হাইকোর্টের নির্দেশে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য

বিচারের পর আদালত নির্দেশ দেয় কার কি সাজা হবে। কিন্তু বিচার ছাড়াই তিনি ৪১ বছর কাটিয়ে দিলেন গারদের পিছনে। নজরে পড়তেই কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের।

সময়টা ১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাস। নেপালের বাসিন্দা ২০ বছরের দুর্গা প্রসাদ টিমসিনা বাড়ির কাছেই একটি বাজারে সরষে বেচতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর আর বাড়ি ফেরেননি।

পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজ করেও তাঁর হদিশ না পেয়ে এক সময় হাল ছেড়ে দেন। এদিকে দুর্গা প্রসাদ ওরফে দীপক যোশী তখন দার্জিলিংয়ে। সেখানে একটি চাবাগানে কাজ করছিলেন তিনি।


সেখানেই এক মহিলাকে হত্যার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর শুরু হয় তাঁর এক জেল থেকে আর এক জেলে ঘোরার পালা। কিন্তু তাঁর বিচারপর্ব পড়ে থাকে বিশবাঁও জলে।

নেপালের বাসিন্দা দুর্গা প্রসাদ এক সময় দমদম সেন্ট্রাল জেলে হাজির হন। সেখানে তাঁর সম্বন্ধে জানতে পারেন তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য কয়েকজন কয়েদী। তারা ছাড়া পেয়ে জেলের বাইরে এসে বিষয়টি মানবাধিকার কমিশনে জানায়।


মানবাধিকার কমিশন থেকে এরপর শুরু হয় খোঁজখবর। বিষয়টি অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছয়। সেখানে মামলাটি ওঠে। কিন্তু ততদিনে কেটে গেছে ৪১টা বছর।

২০ বছরের দুর্গা প্রসাদ পৌঁছে গেছেন ৬১ বছরে। আদালত বিষয়টি জানার পর দুর্গা প্রসাদকে মুক্তি দেয়। তাঁকে তাঁর পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

আদালত রাজ্যসরকারকে নির্দেশ দেয় এভাবে বিচার ছাড়াই দুর্গা প্রসাদের ৪১ বছর কারাবাসের ক্ষতিপূরণ দুর্গা প্রসাদকে দিতে হবে। আর তা গুনতে হবে রাজ্যসরকারকেই।

সেই সিদ্ধান্ত অবশেষে গৃহীত হয়েছে। আদালত রাজ্যসরকারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দুর্গা প্রসাদকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

দুর্গা প্রসাদ এখন নেপালেই রয়েছেন। কিন্তু কেন সরষে বেচতে বেরিয়ে দার্জিলিং চলে এসেছিলেন দুর্গা প্রসাদ? তিনি জানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ের এক বাসিন্দা তাঁকে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাই পালিয়ে তিনি দার্জিলিং চলে আসেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button