একদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভ। অন্যদিকে মৃত রোগীর আত্মীয়দের পাল্টা বিক্ষোভ। এই সবের মাঝে পড়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কার্যত ল্যাজেগোবরে হয়ে যায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের রোগী পরিষেবার হাল। সেই অচলাবস্থার মধ্যেই আবার বিকেলে আচমকাই আগুন ধরে যায় হাসপাতালের রামমোহন ব্লকের দোতলায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালের রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। হাসপাতাল থেকে বার হতে ছুটোছুটি পড়ে যায় রোগীদের মধ্যে। ফাঁকা করে দেওয়া হয় পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড। থেমে যায় হাসপাতালের বাইরে প্রবল বিক্ষোভ। সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠেন বিক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তাররাও। তড়িঘড়ি সব ফেলে আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দমকলবাহিনী আসার আগেই নিয়ন্ত্রণ চলে আসে আগুন। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সকলে।
কিন্তু রোগীর আত্মীয়রা যখন প্রতিবাদে মারমুখী, ঠিক তখনি কেন আগুন লাগল? সেই নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। গত বুধবারই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে রাত ২টো নাগাদ মৃত্যু হয় এক রোগীর। চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকদের উপর চড়াও হন মৃতের পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, মৃতের আত্মীয়রা ১ মেডিক্যাল অফিসার ও ২ চিকিৎসককে মারধরও করেন। চিকিৎসকদের নিগ্রহ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মৃতের পরিবারের ৩ জনকে।
তাতে অবশ্য সন্তুষ্ট হননি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। জুনিয়রদের দাবি শুনতে যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলোচনার পথে হাঁটেন, তখন হাসপাতালের সামনে ধৃতদের জামিনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ধৃতদের আত্মীয়রা। ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই আচমকা আগুন লেগে যায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। সব মিলিয়ে বিক্ষোভ, পাল্টা বিক্ষোভ, আগুনের জেরে আদপে ক্ষতির শিকার হলেন মুমূর্ষু রোগীরাই।