পুরাণের নারদ মুনি ঢেঁকির উপর চেপে ত্রিভুবন চষে বেড়াতেন। আর পৃথিবীর বাসিন্দা মাইক হিউজ তাঁর রকেট বাহনের পিঠে চেপে বিশ্ব পরিভ্রমণ করতে মরিয়া। ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা মাইকের একটাই লক্ষ্য, পৃথিবী যে চ্যাপটা একথা তিনি প্রমাণ করেই ছাড়বেন। পৃথিবীর আকৃতি গোল। এতদিন সেকথাই জেনে এসেছেন বিশ্ববাসী। কিন্তু পৃথিবী গোলের তত্ত্ব এককথায় উড়িয়ে দিয়েছেন ৬১ বছরের লিমো-ড্রাইভার মাইক। অবশ্য তিনি একা নন। তাঁর মত আরও অনেকেই পৃথিবীর গোল হওয়ার তত্ত্ব বিশ্বাস করেন না। কলকাতার কে সি দাস মাইকের মতই একসময় তাঁর আজব তত্ত্ব প্রচার করে বেড়াতেন। পৃথিবী নাকি স্থির, সূর্য তার চারদিকে ঘুরছে। তবে সেকথা প্রমাণ করতে রকেট বানানোর কথা সম্ভবত ভাবেননি তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ার মাইক কিন্তু চ্যাপ্টা পৃথিবীর সঙ্গে মানুষের পরিচয় করাতে রকেট তৈরি করে ফেলেছেন।
গ্যারেজে পড়ে থাকা অব্যবহৃত জিনিসপত্র দিয়ে নিজের ডিজাইনে তৈরি হয়েছে তাঁর সাধের বাষ্পচালিত বাহন। পরিকল্পনাকে সার্থক রূপ দিতে ২০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করতে পিছপা হননি নির্ভীক রকেট নির্মাতা। উত্তর আমেরিকার মোজেভ মরুভূমির ভুতুড়ে অ্যাম্বয় অঞ্চলে পরীক্ষামূলকভাবে রকেট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিও শুরু করে ফেলেন তিনি। বড় একটি স্টিলের পাত্রে ফুটন্ত ৭০ গ্যালন জলের বাষ্পচাপজনিত বিপুল শক্তির ব্যবহারে তাঁর রকেটটিকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্ভট বুদ্ধি আঁটেন মাইক। প্রতি ঘণ্টায় ৮০০ মাইল গতিবেগে ছুটে চলা তাঁর বাহন ১০ মাইল দূরত্ব অবধি পৌঁছালেই নাকি মাইকের উদ্দেশ্য সফল হবে। পৃথিবীর আকৃতি যে চ্যাপটা তা প্রমাণ করে বিশ্ব রেকর্ডের অধিকারী হবেন মাইক। মহাকাশের বুক থেকে পৃথিবীর ছবি তুলে তিনি দেখিয়ে দেবেন পৃথিবীর আকার চাকতির মত। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রশাসন মাইকের এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আপাতত স্থগিত মাইকের স্বপ্নের উড়ান অভিযান। পরিচিত মহলে ‘পাগল’ বলে পরিচিত মাইকের পরের লক্ষ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হওয়া।