চাঁদ থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ভারতের স্বপ্নের চন্দ্রাভিযানের ল্যান্ডার বিক্রম। যার পেটের মধ্যে রয়েছে রোভার প্রজ্ঞান। যা চাঁদের মাটিতে ঘুরে যাবতীয় পরীক্ষা করবে। কিন্তু তার আগে চাঁদের মাটিতে নামাটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আপাতত সেই অপেক্ষায় গোটা দেশ। এমনকি ভারতের এই অভিযানের সাফল্যের দিকে চেয়ে আছে গোটা বিশ্ব। চাঁদের বুকে ভারতের পা দেওয়ার সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য অপেক্ষা আর কিছু সময়ের। ভারতীয় সময় রাত দেড়টা থেকে আড়াইটের মধ্যে বিক্রম নামবে চাঁদের মাটিতে। ইসরোতে তাই এখন সাজ সাজ রব। সব বিজ্ঞানীই অপলক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছেন বিক্রমকে। তার প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছেন তাঁরা।
কীভাবে চাঁদে নামবে বিক্রম? বিজ্ঞানীরা বলছেন চাঁদের মাটিতে নামাটা একটা মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। এটা সফল হলে এই মিশনও অনেকটা সফল। কীভাবে বিক্রম চাঁদের মাটি ছোঁবে তা ইসরোর তরফে ইতিমধ্যেই ট্যুইটারে গ্রাফিক্সের মাধ্যমে চাঁদে নামার খুঁটিনাটি দেখানো হয়েছে। সহজ করে যার মানে দাঁড়ায়, বিক্রমের গায়ে লাগানো হয়েছে অনেকগুলি অত্যাধুনিক ক্যামেরা। বিক্রম যখন ক্রমশ চাঁদের মাটির দিকে এগোতে থাকবে তখন ওই ক্যামেরাগুলির কাজ হবে চাঁদের মাটির কোন অংশে নামলে ভাল হয় তা দেখা, লেজারের মাধ্যমে দেখা হবে চাঁদের মাটির সঙ্গে দূরত্ব। বিক্রম চাঁদের মাটিতে নামবে পাখির পালকের মত। চারটি পায়া করবে সফট ল্যান্ডিং। বিক্রমের গায়ে লাগানো রয়েছে সোলার প্যানেল। খুব ধীরে ধীরে বিক্রম নামবে মাটিতে। চাঁদের মাটিতে নামার ৪০০ মিটার আগে তার চূড়ান্ত পর্যায়ে ইঞ্জিন চালু হবে।
বিক্রম চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর অবস্থা বুঝে ধীরে সুস্থে রোভার প্রজ্ঞানকে বার করবে পেট থেকে। এই পুরো কাজ সম্পূর্ণ হতে ভোর হয়ে যাবে। যা ঠিকঠাক সম্পূর্ণ হলে তা হবে ভারতের জন্য একটা ইতিহাস। গত ২২ জুলাই জিএসএলভি রকেট বাহুবলীতে চেপে মহাকাশে পাড়ি জমায় চন্দ্রায়ন-২। সেই চন্দ্রায়ন-২ থেকে গত ২ সেপ্টেম্বর চাঁদের একদম কাছে পৌঁছে আলাদা হয় ল্যান্ডার বিক্রম। তারপর এই ৩ দিনে তা চাঁদের নামার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এবার সে নামতে চলেছে চাঁদে। চাঁদে ঠিকঠাক অবতরণ হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই তা ছবি পাঠানো শুরু করবে।