বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর অনেক চেষ্টা করেও তা ফেরত আসেনি আর। ফলে এক সময়ে বেঙ্গালুরুতে ইসরোর সাফল্য দেখতে মধ্যরাতে ঠায় বসে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতেই হয় ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবনকে। তাঁর কাছে সব শোনার পর প্রধানমন্ত্রী ইসরো ছাড়ার তোড়জোড় করেন। আর তখনই আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন কে শিবন। এতদিনের পরিশ্রম। এত স্বপ্ন। সারা ভারতের স্বপ্ন। চাঁদে নামার আগের মুহুর্তে সব শেষে এটা বোধহয় মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। না পারারই কথা। অনেক ভারতবাসী যদি ভেঙে পড়ে থাকেন তাহলে তিনি প্রকল্পের মাথা হয়ে কীভাবে নিজেকে ধরে রাখবেন!
প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বসে আছেন চাঁদে বিক্রমের নামা দেখতে। সেখানে তাঁকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা জানাতে হল। এটাও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল হয়তো কে শিবনকে। তাঁকে কাঁদতে দেখে প্রধানমন্ত্রী বেরিয়ে যেতে গিয়েও থমকে দাঁড়ান। তারপর তাঁকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন। সান্ত্বনা দেন। দুজনের মধ্যে কয়েকটা কথাও বিনিময় হয়। তারপর অন্য বিজ্ঞানীরা প্রধানমন্ত্রীকে এগিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু ইসরোর বিজ্ঞানীদের এই প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। জানিয়েছেন এখানেই শেষ নয়। শক্ত থাকার জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন ভারতের আরও বড় সাফল্য ঠিক আসবে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও ইসরোর বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করেছেন। লড়াইয়ের তারিফ করেছেন। সেইসঙ্গে ইসরো পাশে পেয়েছে গোটা নেট দুনিয়াকে। সকলেই কিন্তু ইসরোর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সকলেই বাহবা দিয়েছেন। প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ইসরোকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে। যা হয়তো এই বড় ধাক্কা থেকে ইসরোর বিজ্ঞানীদের আবার ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। ফের চন্দ্রযান মিশন নিয়ে এগোনোর উৎসাহ যোগাবে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা কিন্তু অনেক আগেই তাঁদের মহাকাশ বিজ্ঞানের ওপর দখল গোটা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছেন। জীবনে সাফল্য, ব্যর্থতা থাকেই। তাকে অতিক্রম করে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোই আখেরে সাফল্য আনে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা