অন্ধকার প্রায় নেমেই এসেছে। আশার আলোও সেইসঙ্গে ক্রমশ অন্ধকারে ঢেকেছে। আশায় বাঁচে চাষার প্রবাদ মেনে শেষ আশার ক্ষীণ আলো নিয়ে আর ১টা মাত্র দিনের অপেক্ষা। তারপরই শেষ হয়ে যাবে সব আশা। চাঁদের বুকে নেহাতই জঞ্জাল হয়ে পড়ে থাকবে প্রজ্ঞানকে পেটে নিয়ে ভারতের ল্যান্ডার বিক্রম। যদিও তার আগে আর ১টা দিন। সেই শেষ সুযোগটুকুও কাজে লাগিয়ে দাঁত কামড়ে শেষ লড়াইটুকু হয়ত দেবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এক পক্ষকাল সূর্যের আলো থাকে। এক পক্ষকাল অন্ধকার। এই এক পক্ষকালের হিসাবে মেনেই সেখানে ল্যান্ডার বিক্রমকে নামিয়ে প্রজ্ঞান রোভারকে চাঁদের বুকে ঘোরাতে চেয়েছিল ভারত। বিজ্ঞানীরা ঠিক করেছিলেন সোলার প্যানেল দিয়ে নিজের নিজের কাজ সারবে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। ১৪ দিন টানা কাজ করবে প্রজ্ঞান। কিন্তু চাঁদের বুকে নামার ২ মিনিট আগেই বিক্রমের সঙ্গে সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইসরোর। তারপর থেকে অনেক চেষ্টা চালিয়েও যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি।
এদিকে চাঁদের বুকে এরমধ্যে সূর্যের আলো ক্রমশ প্রখর হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সূর্য সবচেয়ে প্রখর ছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ওপর। তারপর ফের তা স্তিমিত হতে হতে অন্ধকার নামছে চাঁদের বুকে। এখন প্রায় অন্ধকারই বলা চলে চাঁদের এই দিক। খাতায় কলমে আর একটাই দিন সূর্যের আলো অতি ক্ষীণভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পড়বে। তারপর নিকষ কালো অন্ধকার। যখন সেখানে পারদ নামবে মাইনাস ১৮০ ডিগ্রির কাছে। আর শেষ হয়ে যাবে বিক্রম নিয়ে ভারতের সব আশা।
বিক্রম তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, যা চলতি কথায় এআই নামে বেশি পরিচিত, তা দিয়ে চাঁদের বুকে হার্ড ল্যান্ডিং করেছে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সেকথা ইসরোর চেয়ারম্যানও জানিয়েছেন। কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়নি। নাসা চেষ্টা করেও কতটা সফল তা অজানা। এই অবস্থায় শুক্রবারই প্রায় সব আশা শেষে বৈঠকে বসেছে ইসরো। যেখানে ইসরোর বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। আর রয়েছেন জাতীয় পর্যায়ে এ বিষয়ে পণ্ডিতরা। যাঁরা খতিয়ে দেখছেন ঠিক কী কারণে বিক্রমের এই পরিণতি হল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা