Kolkata

চৈত্র সংক্রান্তির শতাব্দী প্রাচীন উৎসবে মাতোয়ারা শহর

গাজনের মাসব্যাপী সন্ন্যাসের অবসান হল চরক ঘোরার মধ্যে দিয়ে। রাজ্য জুড়ে কোথাও বঁটি ঝাঁপ, কোথাও কাঁটা ঝাঁপ, কোথাও গায়ে বা জিভে শলাকা বিঁধে দেওয়া।

চৈত্র শেষ। রাত পোহালেই নতুন বছর। তার আগে চরক সংক্রান্তির দিনটা বঙ্গবাসী কাটালেন একেবারে বাঙালি আচারে, বিচারে। গাজনের মাসব্যাপী সন্ন্যাসের অবসান হল চরক ঘোরার মধ্যে দিয়ে।

রাজ্য জুড়ে কোথাও বঁটি ঝাঁপ, কোথাও কাঁটা ঝাঁপ, কোথাও গায়ে বা জিভে শলাকা বিঁধে দেওয়া। এমন নানা পুরাতনী রীতি মেনে সন্ন্যাস সমাপ্ত করলেন শিবের গোত্রে একমাসের জন্য দীক্ষিত সন্ন্যাসগণ।


বিডন স্ট্রিটে আবার অন্য রীতি। প্রায় আড়াইশো বছর ছুঁতে চলা ছাতুবাবু বাজারের চড়ক ঘূর্ণি এদিনও পালিত হল যথাযোগ্য মর্যাদায়।

এখানে চরক ঘোরার পদ্ধতি থেকে মানুষের ঢল, কোথাওই কোনও পরিবর্তন চোখে পড়েনা। বরং সেই আদিকাল থেকে যেভাবে মানুষ দাঁড়িয়ে চৈত্র সংক্রান্তির বিকেলে সন্ন্যাসীদের আকাশপাকে চোখ জুড়িয়ে নেন, ভিড় জমান। এদিনও তার কোনও অন্যথা নেই।


নিয়ম মেনেই পড়ন্ত বিকেলকে সাক্ষী রেখে একে একে ঘুরলেন সন্ন্যাসীরা। আকাশ থেকেই ছুঁড়ে দিলেন বাতাসা, আনাজ, ফল। প্রসাদের মত সেসব কুড়োতে কচিকাঁচা থেকে বুড়ো, সকলেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন ঠিক আগের মতোই।

ছাতুবাবু বাজারের এই চড়ক এখন এখানকার ব্যবসায়ী সমিতির দায়িত্বে। ভাল লাগল ব্যবস্থাপনায়। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ভলান্টিয়ার দিয়ে কয়েক জায়গায় নিয়ন্ত্রিত হল ভিড়। চড়কের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত বিডন স্ট্রিটের মেলা। সূর্য পশ্চিমে ঢলতেই এই একদিনের মেলা জমে উঠল মানুষের ঢল আর কোলাহলে।

হাজারো পসরা সাজিয়ে যেমন হাজির বিক্রেতারা। তেমনই সেসব দেখেশুনে কিনতে হাজির হাজার হাজার মানুষ। ছিল যথেষ্ট পুলিশি বন্দোবস্ত।

ফলে এই একটুকরো কলকাতা বাংলা বর্ষবরণের বিকেল থেকেই মেতে উঠল নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে। সাদামাটা জীবনের বাইরে জাঁকজমকে ঝলমলে এক অন্য সন্ধের উৎসবে মাতোয়ারা করল শহরবাসীকে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button