সাধু বেশে এসে দাবায় রাজকন্যাকে হারিয়ে দিলেন ভগবান শিব, কথা রাখলেন রাজা
ভগবান শিব যে দাবা খেলায় তুখোড় ছিলেন তা হয়তো অনেকের অজানা। তবে তাঁর দাবা খেলার ক্ষমতা নিয়ে এক কাহিনি মুখে মুখে ঘোরে এই মন্দিরে।
অনেকদিন আগের কথা। সে সময় রাজা বাসুদেবা নামে এক রাজা ছিলেন। তাঁর কোনও সন্তান ছিলনা। এই নিয়ে রাজা রানির মন বিষণ্ণ হয়ে থাকত। একদিন তাঁরা ২ জনে ভগবান শিবের কাছে তাঁদের এই দুঃখের কথা জানালেন।
ভগবান শিব তাঁদের সব কথা শুনলেন। এরপর শিবের কথামত রাজা ও রানি গেলেন তামিরাপারানি নদীর ধারে। সেখানে তাঁরা ২ জন একসঙ্গে নদীতে স্নান করতে নামলেন।
স্নান করাকালীন সময় তাঁরা দেখলেন একটি শঙ্খ তাঁদের দিকে ভেসে আসছে। সেই শঙ্খ হাতে তুলে নিতেই অবাক হয়ে গেলেন রাজা রানি। শঙ্খ নিমেষে বদলে গেল এক ছোট্ট ফুটফুটে কন্যা সন্তানে।
এই কন্যা আসলে ভগবান শিবের পত্নী পার্বতী। রাজা রানি অবশ্য সেকথা জানতে পারলেননা। তাঁরা তো কোলে সন্তান পেয়ে বেজায় খুশি।
এদিকে ভগবান শিব স্বর্গের সপ্তমাতার এক মাতা রাজরাজেশ্বরীকে ওই কন্যার যত্ন নিতে পাঠালেন। কন্যা দিনে দিনে বড় হয়ে উঠলেন। রাজকন্যার এক বড় গুণ হল তিনি দাবা খেলায় তুখোড়। তাঁকে দাবায় হারানো প্রায় অসম্ভব।
এদিকে রাজা রাজকন্যার বিয়ের জন্য প্রস্তুতি শুরু করলেন। ডাকা হল স্বয়ম্বর। সেখানে শর্ত দেওয়া হল রাজকন্যাকে যিনি দাবা খেলায় হারাতে পারবেন, তাঁকেই রাজকন্যা বিয়ে করবেন।
অনেক রথী মহারথী এলেন। কিন্তু রাজকন্যার সঙ্গে কেউই দাবায় এঁটে উঠতে পারলেননা। এই সময় একদিন তাঁদের দ্বারে এসে উপস্থিত হলেন এক সাধু। সেই সাধু রাজকন্যার সঙ্গে দাবা খেলতে চাইলেন। সেদিন কিন্তু রাজকন্যা পেরে উঠলেন না। দাবায় তাঁকে ওই সাধুর কাছে হারতে হল।
এদিকে রাজাও তাঁর কথা রাখলেন। রাজকন্যার সঙ্গে সাধুর বিয়ে দেবেন বলে জানালেন। এই সময় ভগবান শিব ও পার্বতী তাঁদের আসল রূপ প্রকাশ করলেন। শিব পার্বতীর আশির্বাদ পেলেন রাজা বাসুদেবা।
তামিলনাড়ুর তিরুভারুর জেলার পুভানুর গ্রামে অবস্থিত চতুরঙ্গ বল্লভনাথর মন্দিরে এই কাহিনি মুখে মুখে ঘোরে। যেহেতু পার্বতীকে শিব দাবা খেলায় হারিয়ে দিয়েছিলেন, সে কথা মাথায় রেখেই এই মন্দিরের বিগ্রহের নাম চতুরঙ্গ বল্লভনাথর। এখনও বহু দূর দূর থেকে ভক্তরা হাজির হন এই মন্দিরে দাবাড়ু ভগবান শিবের পুজো দিতে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা