ভার লাঘব করতে জন্ম নিল উড়ন্ত মুদ্রা
যেকোনও আবিষ্কারের পিছনে একটা কারণ থাকে। প্রয়োজন থাকে। সেই প্রয়োজন মেটাতেই একসময় জন্ম নিয়েছিল উড়ন্ত মুদ্রা। যার সঙ্গে এখন সারা বিশ্ব পরিচিত।
সময়টা সপ্তম খ্রিস্টাব্দ। তখন বাণিজ্য যথেষ্ট পরিচিত। ব্যবসায়িক লেনদেনও চলত পুরোদমে। জিনিসের বিনিময়ে অর্থ, এটাই ব্যবসা। এই ব্যবসা করতে গিয়েই হচ্ছিল যত বিপত্তি।
কার্যত ব্যবসা যত ফুলে ফেঁপে উঠছিল ততই কালঘাম ছুটে যাচ্ছিল ব্যবসায়ীদের। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থও খরচ হচ্ছিল। কারণ বড় লেনদেনের সময় যে বড় অঙ্কের অর্থ দিতে হচ্ছিল তা তখন ছিল কয়েনে।
সেই ধাতব মুদ্রা এতটাই ভারী হত যে তা বহন করাটাই একটা চিন্তার বিষয় ছিল। কারণ মুদ্রাগুলি ছোট ছোট থলেতে ভরা হত। তারপর তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে কয়েকজন মানুষকে ভাড়া করতে হত। তাঁরা সেই কয়েনের থলে বহন করতেন।
এভাবে বড় লেনদেনে এত ভার বহন করা এবং তা গুনে নেওয়া দেওয়া করা একটা ঝকমারি হয়ে উঠেছিল। এ সমস্যা থেকে মুক্তি চাইছিলেন চিনের ব্যবসায়ীরা।
চিনে তখন ট্যাং রাজত্ব চলছে। সেই সময় ব্যবসায়ীরা স্থির করেন এভাবে আর পারা যাচ্ছেনা। থলে ভরে ভরে এভাবে এক প্রান্ত থেকে অন্ত প্রান্তে কয়েন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
কিন্তু ব্যবসা তো বন্ধ করা যায়না। তাই তাঁরা মাথা খাটিয়ে বার করলেন এক ধরনের সার্টিফিকেট। যার একটি মূল্য হত। সেটা ক্রমশ একটি বিনিময় মাধ্যম হয়ে উঠল। আর এই সার্টিফিকেট জন্ম দিল কাগজি মুদ্রার। যাকে বর্তমানে নোট বলা হয়।
বিশ্বজুড়ে এখন বিনিময় মাধ্যম হিসাবে সব দেশেই কাগজি মুদ্রা ব্যবহার হয়। ছোট লেনদেনে কয়েন। তবে এই কাগজি মুদ্রার ব্যবহার শুরু হয় চিনে সপ্তম শতকে। এই কাগজি মুদ্রাকে সে সময় উড়ন্ত মুদ্রাও বলা হত।