বছর শেষের উৎসব মানেই কলকাতা শহরের প্রথম মনে আসে পার্ক স্ট্রিটের কথা। গত ২১ ডিসেম্বর থেকেই সেখানে শুরু হয়ে গেছে বড়দিন ও বছর শেষের উৎসব। আলোয় ঝলমল করছে গোটা চত্বর। গত রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় বড়দিনের ছুটির পালে হাওয়া লেগে গেছে ওদিন থেকেই।
পার্ক স্ট্রিটে সন্ধে নামতেই মানুষের ঢল নামে। অধিকাংশই নতুন প্রজন্মের ভিড়। এবার আবার কলকাতায় শীতের মেজাজটাও খাসা। টানা ঠান্ডা অব্যাহত। ফলে শীতের দিনে বছর শেষের আনন্দটা চেটেপুটে উপভোগ করতে শহরবাসীই বা পিছিয়ে থাকেন কেন? ফলে রবিবারের ছুটিতে সোজা তাঁরা হাজির হয়েছিলেন পার্ক স্ট্রিটে। সোমবার আবার ক্রিসমাস ইভ। বড়দিনের আগের রাত। আর ২৪ ডিসেম্বর মানেই পার্ক স্ট্রিটে উপচে পড়া ভিড়।
সোমবার বিকেল থেকেই পার্ক স্ট্রিট চত্বরে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। যত সূর্য পাটে গিয়েছে ততই ভিড় বেড়েছে। ভিড় সামলাতে হিমসিম অবস্থা হয় পুলিশের। অবশ্য এমন ভিড়ের কথা মাথায় রেখে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তৎপর ছিল পুলিশ প্রশাসন। ওয়াচ টাওয়ার হোক বা সিসিটিভি। সব দিয়েই চলে নজরদারি। ভিড়কে সুশৃঙ্খল রাখতে রাস্তাতেও পুলিশ ছিল যথেষ্ট তৎপর।
বড়দিনের আগের সন্ধেয় নববধূর সাজে সেজে ওঠা পার্ক স্ট্রিটের কোনও দোকানেই জায়গা ছিলনা। দোকানে ঢুকতে দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে দেখা যায় অনেককে। ফ্লুরিজের মত কেকের দোকানে সন্ধে নামার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়েছে। রাত যত গড়িয়েছে ততই বেড়েছে উন্মাদনা। অনেকে এখানে আসেন পরিবার নিয়ে তো কেউ বন্ধুরা। কেউ আবার ভিড়ের মধ্যেও আপনজনের সান্নিধ্যটা উপভোগ করেন উৎসবের মেজাজে। কেউ আবার একাও আসেন এখানে। তবে সকলের লক্ষ্য একটাই। উৎসবের মেজাজটা বেশ তারিয়ে উপভোগ করা। বড়দিনের আগের রাতটা উপভোগ করা।
বড়দিনের আগের রাত মানে রাত ১২টা বাজলেই গির্জায় গির্জায় বেজে ওঠে ঘণ্টা। হয় বিশেষ প্রার্থনা। প্রভু যিশুর জন্মদিন পালিত হয় সাড়ম্বরে। আর সেই রাতে রাত যত গড়ায় পার্ক স্ট্রিট যেন আরও মোহময় হয়ে ওঠে।
পার্ক স্ট্রিটে এদিন ছিল নানা ধরণের আজব সাজের ব্যবস্থা। মাথায় আলোর শিং থেকে সান্তা টুপি কিছুই বাদ ছিলনা। চাপ ভিড়েও সকলের মুখে লেগেছিল হাসি। মনের আনন্দটা চোখে মুখে স্পষ্ট ফুটে উঠছিল। এটাই কলকাতা। আর এটাই পার্ক স্ট্রিটের বড়দিনের আগের রাতের মেজাজ। সময় বদলাতে পারে। কিন্তু এই আনন্দটা অকৃত্রিম থেকে যায়। বছরের পর বছর।