Lifestyle

সান্টাক্লজের আসল পরিচয় কি?

একমুখ দুধসাদা দাড়ি, পরনে লাল-সাদা শীত পোশাক। মাথায় লাল টুপি আর কাঁধের মস্ত ঝোলায় রকমারি উপহারের সম্ভার। বড়দিন কথাটা উচ্চারণমাত্রই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সদা হাস্যমুখ সান্তাবুড়োর ছবি। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ সকলের খুব প্রিয় এই সান্তাদাদুর পরিচয় নিয়ে অবশ্য ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে।

আনুমানিক ২৮০ খ্রিস্টাব্দে এশিয়া মাইনরের পাতারা অঞ্চলে জন্ম রক্তমাংসের সান্টাক্লজ ওরফে সেন্ট নিকোলাসের। ডাচ ভাষায় সেন্ট নিকোলাসের উচ্চারণ ‘সিন্টার ক্লজ’ থেকে সান্টাক্লজ নামটির উদ্ভব। চতুর্থ শতকে প্রাচীন গ্রিসের মায়রা নগরে চার্চের বিশপ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নিকোলাস। প্রচলিত লোককথা অনুসারে, দয়ালু নিকোলাস দুঃস্থ-আর্ত মানুষদের হয়ে সারাজীবন কাজ করে গেছেন। ছোটো বাচ্চাদের ভারী ভালবাসতেন তিনি। নানা উপহারে ভরিয়ে দিতেন তাদের। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন নিকোলাস। যে কারণে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে ভালবাসতেন, শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর সেই মহানুভবতার কথাই কালক্রমে লোকমুখে ব্যাপক প্রচার পেয়ে তাঁকে এক কিংবদন্তী চরিত্রে পরিণত করে।


প্রচলিত এই গল্পকথাকে যদিও কেউ কেউ মানতে পারেননি। সেন্ট নিকোলাসের ঔদার্যের আড়ালে তাঁর স্বেচ্ছাচারিতার অজানা কাহিনি তুলে ধরেছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, যিশুখ্রিস্টের মৃত্যুর কিছুকাল পর থেকেই খ্রিস্টধর্মের উর্ধ্বে ওঠার চেষ্টা করেন কিছু স্বার্থান্ধ ধর্মযাজক। বাইবেল ও ধর্মকে ক্ষমতাকেন্দ্রিকরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে থাকেন তাঁরা।

গবেষকদের দাবি, সেন্ট নিকোলাস ছিলেন এঁদেরই একজন। খ্রিস্টধর্মের একেশ্বরবাদ ধারণার বিকৃতি ঘটানোর পাশাপাশি একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী চার্চগুলিকে ধ্বংস করা, প্রতিবাদীদের নিগ্রহ করার মতো অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি ‘মানুষ’ সান্টাক্লজের কুকীর্তি ধামাচাপা দিতে সেইসময় চার্চ পৌরাণিক দেব চরিত্র অডিনের প্রতিমূর্তির হুবহু টুকলি করে বলে অভিযোগ গবেষকদের। তবে বিতর্ক যাই থাক, শিশু-অনুরাগী হিসেবে যে আজীবন সেন্ট নিকোলাস মানুষের মধ্যে অমর হয়ে থাকবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button