বড়দিনের প্রাক্কালে প্রকৃতিসহ সমগ্র প্রাণিজগৎ যখন গভীরঘুমে মগ্ন, তখন নিঃশব্দে বাড়ির দোরগোড়ায় এসে উপস্থিত হন এক প্রাণচঞ্চল প্রবীণ। আমাদের সকলের প্রিয় সান্টাক্লজ। অবশ্য তিনি একা নন, গভীর রাতের অভিসারে তাঁর ৮ মানবেতর সঙ্গীও স্বস্থানে ঠিক হাজির থাকে। দাশের, ডান্সার, ভিক্সেন, কমেট, ডোনের আর ব্লিক্সেন নামের আটরঙা ৮টি বলগা হরিণ। তুষারাবৃত পৃথিবীর কোণে কোণে ২৪ ডিসেম্বরের শীতল রাতে সান্তাদাদুর উপহারের অপেক্ষায় ঘুমিয়ে থাকা নিষ্পাপ শিশুদের কাছে সান্টাক্লজকে সযত্নে পৌঁছিয়ে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব যে তাদের কাঁধেই।
১৮২৩ সালে প্রকাশিত আমেরিকান কবি ক্লিমেন্ট মুরের লেখা ‘এ ভিজিট ফ্রম সেন্ট নিকোলাস’ কবিতায় সান্টার উদ্দেশ্যমূলক শীতকালীন যাত্রাপথের সঙ্গীদের সঙ্গে মানুষের প্রথম পরিচয় হয়। এদের মধ্যে সুশৃঙ্খলিতভাবে দল পরিচালনার দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে সামলায় ডান্সার নামের হরিণীটি। সান্টার বিপদ হলেই সে তাঁর সাহায্যে এগিয়ে যায়। আবার পুরুষ হরিণ ডোনের বা দান্ডারকে বজ্রের প্রতীক বলে মনে করা হয়। ব্লিক্সেমের দুরন্ত গতির চমককে তুলনা করা হয় বিদ্যুতের সঙ্গে। পরবর্তীকালে আরও একটি লম্বা শৃঙ্গধারী হরিণের উল্লেখ পাওয়া যায় বিখ্যাত একটি ক্রিসমাস সঙ্গীতে। যেমন মিষ্টি তার নাম, তেমনি মিষ্টি তার স্বভাব।
কথিত আছে, কোনও একবার গাঢ় কুয়াশাচ্ছন্ন পৃথিবীর বুকে আদুরে হরিণদের সঙ্গে উপহারসমেত পরিভ্রমণে বেরিয়ে বেজায় বিপদে পড়েন সান্টা। সেইসময় তাঁর সঙ্গে দেখা হয় রুডলফ নামের এক ছোট্ট দুখী হরিণের। সে যাত্রায় জ্বলজ্বলে নাকের জন্য রুডলফ অন্ধকারে মোড়া পিছল পথে স্লেজগাড়ির আলোকোজ্জ্বল মার্গপ্রদর্শক হয়ে ওঠে। বেজায় খুশি সান্টা তাকে অনেক উপহারে ভরিয়ে দেন। তাই এবার থেকে আকাশপথের বুক চিরে উড়ন্ত সান্টাকে দেখে তাঁর দ্রুতগতিসম্পন্ন মৃগবন্ধুদের কৃতিত্বের কথা ভুলো না কিন্তু কেউ।