বছর শেষে ক্রিসমাসের আগের রাতে উপহারের ঝুলি নিয়ে সান্টাক্লজের আসার অপেক্ষায় থাকে শিশুমন। বলগা হরিণে টানা স্লেজ গাড়ি চড়ে কখনো আকাশপথ বেয়ে, কখনো বা বরফপিছল দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে সময়মত বাড়ির দোরগোড়ায় এসে উপস্থিত হন সকলের প্রিয় সান্তাদাদু। কোন সুদূর থেকে তিনি যে বছরের নির্দিষ্ট দিনটিতে এসে হাজির হন, সে খবর খুব কম মানুষই রাখেন।
সুদূর ফিনল্যান্ডের মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় রোভানিয়েমি গ্রামে সান্তাখুড়োর বাড়ি। তবে কেউ কেউ মনে করেন ফিনল্যান্ডের কোরভাতুন্তুরি নামে কোনও এক রহস্যময় গ্রামই সান্টাক্লজের আসল ঠিকানা। তবে সেই গ্রামের অস্তিত্ব নিয়ে আজও ধোঁয়াশায় রয়েছে মানুষ। তাই রোভানিয়েমি সান্টার জন্মভূমি হিসেবে বর্তমানে স্বীকৃত।
ফিনল্যান্ডের রাতের আকাশ যখন মহাজাগতিক মেরুপ্রভার ছটায় লাস্যময়ী হয়ে ওঠে, তখন মর্ত্যে সান্টার বাড়িকেও সাজিয়ে তোলা হয় অনবদ্য আলোকমালায়। নিসর্গসৌন্দর্যে পর্যটকদের মন ভরিয়ে দেওয়া রোভানিয়েমিতে ১৯৫২ সালে সান্টার নামে গড়ে তোলা ডাকদপ্তরটি খুলে দেওয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। লাল-সাদা রঙের সেই দপ্তরই বর্তমানে ‘সান্টাক্লজের বাড়ি’ নামে পরিচিত।
সেই বাড়ি থেকে নানারকমের উপহার সামগ্রি, যেমন, কার্ড, খেলনা, বাহারি ডিজাইনের পোশাক সংগ্রহ করতে পারেন পর্যটকরা। এমনকি নিজের প্রিয় মানুষকে মেল মারফত ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানানোর সুযোগও আছে ডাকদপ্তরটিতে। এর পাশাপাশি সান্টার গ্রামে পর্যটকদের আকর্ষণ ও মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে আছে বরফ দিয়ে তৈরি নানা ভাস্কর্য। আছে বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, হোটেল, বাজার মায় ইগলু পর্যন্ত। তবে সান্টাক্লজ আসলে যাঁর কল্পিত প্রতিরূপ, সেই সেন্ট নিকোলাসের জন্ম কিন্তু প্রাচীন এশিয়া মাইনরের পাতারা অঞ্চলে। তাই রক্তমাংসের সান্টার বাড়ি ঢুঁ মারতে হলে যেতে হবে সেখানেও।