২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মহিলাকে পাওয়া গেল সমুদ্রে
২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক মহিলাকে অচেতন অবস্থায় সমুদ্রের জলে পাওয়া গেল। তাঁকে উদ্ধার করেন এক মৎস্যজীবী। মহিলা শোনালেন তাঁর কাহিনি।
বোগোটা : ২ বছর ধরে তাঁর কোনও খোঁজ ছিলনা। পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজে পাননি। তাঁকে যে আদৌ কখনও খুঁজে পাওয়া যাবে সে আশাও ছেড়ে দিয়েছিলেন সকলে। অবশেষে তাঁর খোঁজ মিলল। জলে ভাসছিলেন তিনি। অচেতন অবস্থায়।
এক মৎস্যজীবী দেখেন জলের মধ্যে কিছু একটা ভাসছে। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন কোনও কাঠের টুকরো হয়তো হবে। কাছে যেতেই আঁতকে ওঠেন তিনি। এক মহিলা চিত হয়ে ভাসছেন জলে। চোখ বন্ধ। দ্রুত নৌকা কাছে নিয়ে যান মৎস্যজীবী। তারপর টেনে নৌকায় তুলে নেন মহিলাকে।
নৌকায় তোলার পর বেশ কিছুক্ষণ মহিলার জ্ঞান ফেরেনি। আস্তে আস্তে জ্ঞান ফিরতে তাঁকে জল খেতে দেন ওই মৎস্যজীবী। তারপরই দেখা যায় মুখে হাত দিয়ে কেঁদে ফেলেন ওই মহিলা। ওই মহিলাকে পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২ বছর ধরে বেপাত্তা ছিলেন তিনি। তারপর তাঁকে পাওয়া গেল সমুদ্রের মাঝখান থেকে। কীভাবে হল এসব?
ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি বিয়ের পর থেকেই স্বামীর অত্যাচারের শিকার। কখনও গায়ে হাত তো কখনও কুকথা তাঁর নিত্য দিনের সঙ্গী ছিল। তবু দাঁতে দাঁত চেপে সংসার করে গেছেন তিনি, ২ মেয়ের মুখ চেয়ে।
মহিলার দাবি, ২ বছর আগে একদিন তাঁর স্বামী মেরে তাঁর মুখ ফাটিয়ে দেন। তারপর তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করেন। ওই ঘটনার পর আর বাড়িতে থাকার সাহস পাননি তিনি। বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়।
তারপর উদভ্রান্তের মত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। এমনকি তাঁর বাপের বাড়িতেও তাঁর স্থান হয়নি। অবশেষে একটি শরণার্থী শিবিরে জায়গা হয় তাঁর। অ্যাঞ্জেলিকা নামে ওই মহিলা জানান, ওই শরণার্থী শিবির থেকেও এক সময় তাঁকে বার করে দেওয়া হয়।
এরপর তিনি স্থির করেন আর তিনি তাঁর জীবন রাখবেন না। সমুদ্রে লাফ দিয়ে প্রাণ বিসর্জন দেবেন তিনি। একটি বাস ধরে সমুদ্রের ধারে পৌঁছন। পুয়ের্তো কলম্বিয়ার ধার ঘেঁষা ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে ঝাঁপ দেন অ্যাঞ্জেলিকা গাইতান। তারপর আর তাঁর কিছু মনে নেই।
অচেতন হয়ে সমুদ্রে ভাসতে থাকেন তিনি। এমনভাবে প্রায় ৮ ঘণ্টা উত্তাল ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে ভাসার পর অবশেষে তাঁকে উদ্ধার করেন ওই মৎস্যজীবী। আপাতত অ্যাঞ্জেলিকার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে অ্যাঞ্জেলিকার মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। মেয়ে অবশ্য দাবি করেছে তার মা ২ বছর ধরে নিরুদ্দেশ ছিলেন বটে, তবে তাঁর সঙ্গে কোনও অত্যাচার কখনও হয়নি। পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।