শনিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে সাইক্লোন বুলবুল। তার আগে ওড়িশায় দুপুরেই একটা ঝাপটা মেরেছিল এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। তাতে ওড়িশার ৩ জেলায় যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপর সমুদ্রপথে এগোনোর পর রাত ৮টা নাগাদ কিছুটা শক্তি হারিয়ে বুলবুল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিয়ে সাগরদ্বীপ দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে। সেখান দিয়ে এগিয়ে তা ভোর রাতের দিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশেও প্রবল তাণ্ডব শুরু করে বুলবুল। বুলবুলের তাণ্ডবে বাংলাদেশে ১৩ জনের মৃত্যু হয়।
দক্ষিণ বাংলাদেশেই বুলবুল প্রধানত তাণ্ডবলীলা চালায়। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। অজস্র গাছ উপড়ে পড়ে। গাছ পড়ে, বাড়ির পাঁচিল পড়ে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। অবশ্য পৃথক পৃথক ঘটনা মিলিয়ে মোট ১৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ প্রশাসন। খুলনা, গোপালগঞ্জ ও বরগুনা জেলায় ২ জন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালী, ভোলা, শরিয়তপুর, পিরোজপুর, মাদারীপুর, বরিশাল ও বাগেরহাটে ১ জন করে ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে গাছ ভেঙে পড়ে।
বুলবুল আসার আগে বারবার মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করে প্রশাসন। বাংলাদেশ প্রশাসনের তরফে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল। অভিযোগ তা সত্ত্বেও ২টি ট্রলার ওই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই সমুদ্রে রওনা দেয়। তার একটি ট্রলার বুলবুলের কবলে পড়ে ডুবে গিয়েছে। অন্য একটি ট্রলারের এখনও কোনও খোঁজ নেই। খোঁজ নেই এই ২ ট্রলারে থাকা ২৮ জন মৎস্যজীবীরও।
বাংলাদেশে বুলবুল ৫ হাজারের ওপর বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। ২১ লক্ষ মানুষকে আগে থেকেই সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা আর বাড়তে পারেনি। তবে ধ্বংসের চিত্র এখনও স্পষ্ট। বহু এলাকায় গাছ পড়ে আছে। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারগুলো থেকে বা বিভিন্ন স্কুলে তৈরি ত্রাণ শিবিরগুলি থেকে মানুষজন ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। ক্রমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চলছে উদ্ধারকাজ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা