দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, বকখালি সহ রাজ্যের বিভিন্ন সমুদ্র সৈকত গত শুক্রবারই ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছিল। সমুদ্রের ধারেকাছে পর্যটকদের যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। বুলবুল আছড়ে পড়লে কী হবে তা আন্দাজ করে অনেকেই আগেভাগে বাড়ি ফিরেছেন। কিছু পর্যটক হোটেলেই আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা চাইছেন হোটেলে থেকেই যেতে। দেখে যেতে সমুদ্র থেকে সাইক্লোন স্থলভূমিতে প্রবেশ করলে তার চেহারা কেমন হয়। এও এক অভিজ্ঞতা।
তবে কারও কাছে এটা একটা রোমহর্ষক বিষয় হলেও স্থানীয় মানুষজন কিন্তু আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদের ঘরবাড়ির কী পরিস্থিতি হতে চলেছে তা তাঁরাও বুঝতে পারছেন না। সবচেয়ে আতঙ্কে সুন্দরবনের মানুষজন। কারণ ওখান দিয়েই ঝড়টি প্রবেশের কথা। আয়লার স্মৃতি তাঁদের এখনও তাজা। তাই বুলবুল তাঁদের জন্য কী ধ্বংসলীলা নিয়ে আসছে তা ভেবেই প্রহর গুনছেন সুন্দরবনবাসী।
পশ্চিমবঙ্গের গোটা সমুদ্র উপকূল জুড়েই শনিবার সকাল থেকে ক্রমশ ঝোড়ো হাওয়ার দাপট বাড়ছে। বাড়ছে বৃষ্টি। সব সমুদ্রতটই সুনসান। সুরক্ষাকর্মীদের কয়েকজন রয়েছেন নজরদারির জন্য। সমুদ্র ক্রমশ উত্তাল হয়ে উঠছে। ঝাপসা হচ্ছে সমুদ্রের দিক। বৃষ্টি পড়েই চলেছে। সব মিলিয়ে একটা চাপা দুশ্চিন্তা আর আতঙ্ক গ্রাস করেছে এসব এলাকাকে। ক্রমে এখানে ঝড়ের দাপট বাড়তে থাকবে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে শনিবার সন্ধের পর বুলবুল আছড়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ বলেই নয়, বুলবুলের দাপটে ওড়িশা উপকূল জুড়েও শনিবার ভোর থেকে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সর্বোচ্চ গতি ছিল ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। এই ঝড়ের দাপটে প্রচুর গাছ উপড়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে ইলেকট্রিকের স্তম্ভ। দ্রুত উপড়ে পরা গাছ সরিয়ে রাস্তা সাফ করার কাজ শুরু করে প্রশাসন। কেন্দাপারা, ভদ্রক ও জগতসিংহপুরে সবচেয়ে বেশি গাছ উপড়ে গেছে। হাজারের ওপর মানুষকে উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত বুলবুলের গতি ১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। তা সকালে ওড়িশায় তাণ্ডব চালানোর পর পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা