সোমবার আকাশপথে বুলবুল বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুলবুল রাজ্যের স্থলভাগে প্রবেশ থেকে শুরু করে তা বয়ে যাওয়া, এই পুরো সময়টা নবান্নের কন্ট্রোল রুমে বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিটি মুহুর্তের খবর নিয়েছেন। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার সন্ধে থেকে রাতভর এ রাজ্যে তাণ্ডব চালিয়ে বুলবুল রবিবার ভোরে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। তার জেরে বাংলাদেশেও যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
এদিকে এ রাজ্যে বুলবুল অতি প্রবল নয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসাবেই ঢোকে। শনিবার রাত ৮টা নাগাদ বুলবুল সমুদ্র ছেড়ে সাগরদ্বীপ দিয়ে রাজ্যে প্রবেশ করা শুরু করে। কলকাতা কোর এলাকা না হলেও রাতে শহরবাসী টের পেয়েছেন ঝড়ের শব্দ। উপকূলীয় এলাকাতেই মূলত বুলবুল আঘাত হানে। যদিও প্রবেশের আগেই তা কিছুটা শক্তি ক্ষয় করেছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। কিন্তু তাতেও যা তাণ্ডবলীলা বুলবুল দেখিয়েছে তা নেহাত কম নয়।
বুলবুলের তাণ্ডবে উত্তর ২৪ পরগনায় ৪ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও এছাড়াও কলকাতায় শনিবার সকালেই ঝড়ে গাছ পড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়। ঝড়ের সময় রাজ্যের ৩টি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকা। নন্দীগ্রামে গাছ পড়ে ১ মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও গাছ পড়ে বা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বা বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে অন্য মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুর পাশাপাশি অসংখ্য গাছ ভেঙে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। ৩০ হাজারের ওপর বাড়ি ভেঙে গেছে। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি প্রচুর। তবে তার পুরো হিসাব এখনও পরিস্কার নয়। উদ্ধারকাজ চলছে।
কলকাতা শহরেও অনেক জায়গায় ঝড়ের দাপটে গাছ পড়ে গেছে। নারকেলডাঙা মেন রোডে গাছ ভেঙে পড়ে। গাছ ভেঙেছে বালিগঞ্জে। এছাড়াও বেশ কিছু এলাকায় গাছ পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বুলবুলের পর রাজ্যের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী রাস পূর্ণিমায় ঠিক করেছিলেন উত্তরবঙ্গ সফরে থাকবেন। কিন্তু সেই সূচি বাতিল করেছেন তিনি। পিছিয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ যাত্রা। ঝড় বিধ্বস্ত এলাকায় গিয়ে সেখানে উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখতে চান তিনি।