রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলিকে কার্যত তছনছ করে ওড়িশা ছেড়ে ফণী বিদায় নিয়েছে ২ দিন হল। তবু এখনও ফণী প্রভাবিত এলাকাগুলোতে ন্যূনতম পরিষেবাগুলো ফেরাতে পারল না ওড়িশা সরকার। অধিকাংশ জায়গা এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। জল সরবরাহ এখনও শুরু হয়নি। মোবাইল পরিষেবা বলে কিছু নেই।
এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে এসব জায়গার মানুষকে। যদিও ফণী আসার আগে থেকেই যাবতীয় সুরক্ষা বন্দোবস্ত নিয়েছিল ওড়িশা সরকার। ফণী ধ্বংসলীলা চালানোর পরই সেখানে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। কিন্তু তারপরেও রবিবারেও প্রভাবিত এলাকাগুলোর সিংহভাগ জায়গায় ন্যূনতম পরিষেবাগুলো স্বাভাবিক করতে না পারায় মানুষের মনে ক্ষোভ জমছে।
পুরী ও খুরদা জেলার একটা বড় অংশ, এমনকি রাজধানী ভুবনেশ্বর পর্যন্ত ফণীর প্রভাবে তছনছ হয়ে গেছে। সেসব জায়গায় এখনও অবস্থা কঠিন। প্রায় ৩০ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্রাহকের বাড়ি বিদ্যুৎহীন অবস্থায় পড়ে আছে। যেটুকু জানা যাচ্ছে যে ঝড়ের জেরে ওড়িশার বিদ্যুৎ পরিষেবার পরিকাঠামো বড় ধরণের ধাক্কা খেয়েছে। ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানাচ্ছে যা পরিস্থিতি তাতে ভুবনেশ্বরই বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে ৫ থেকে ৭ দিন লেগে যাবে।
ফণীর জেরে ওড়িশা জুড়ে বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের আগামী ১৫ দিন রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। সাইক্লোন প্রভাবিত এলাকাগুলির জন্য রবিবার বিশেষ প্যাকেজের ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেক প্রভাবিত পরিবার ৫০ কেজি চাল, ২ হাজার টাকা ও পলিথিনের শিট পাবেন। যেসব বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে সেগুলি সরকার সারিয়ে দেবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।
ফণীর জেরে যেসব কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে, ফসল নষ্ট হয়েছে, মৎস্য চাষ নষ্ট হয়েছে সেগুলি খতিয়ে দেখে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এখন উদ্ধারকাজ ও অবস্থা স্বাভাবিক করার কাজ চলছে। সেগুলি সম্পূর্ণ শেষ হলে রাজ্য জুড়ে বৃক্ষরোপণ শুরু করা হবে। কারণ ফণী অসংখ্য গাছ উপড়ে দিয়েছে। আগামী সোমবার ওড়িশার ফণী উত্তর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা