যাবতীয় প্রতীক্ষার শেষ। যে সময় মৌসম ভবন পূর্বাভাসে জানিয়েছিল তারও আগে পুরীতে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ফণী। শুক্রবার সকাল ৮টার পরই পুরীতে আছড়ে পড়ে ফণী। শুরু হয় প্রবল ঝড়। ঝড়ের কমপক্ষে গতি ছিল ১৪২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। সর্বোচ্চ ১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছতে পারে সেটি। সঙ্গে প্রবল জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়। সমুদ্রের জল বালুকাবেলা ভরিয়ে দিয়ে রাস্তায় চলে আসে। চারধার ধোঁয়াশায় ভরে যায়।
খোলা জায়গায় কারও পক্ষে দাঁড়ানোও সম্ভব হচ্ছেনা। ঝড়ের দাপটে উল্টে যাচ্ছেন মানুষ। তবে কেউ বাইরে নেইও। পুরীতে অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ারগুলো ভেঙে পড়েছে। সমুদ্রের দিকে তেমন কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। কেবল বালির ওপর জলের ঝাপটা দেখা যাচ্ছে মাত্র। ঝড়ের প্রলয়ঙ্করী আওয়াজ ছাড়া পুরী জুড়ে আর কোনও শব্দ নেই।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে আছড়ে পড়বে ফণী। কিন্তু যত তা স্থলভাগের দিকে এগিয়েছে ততই তার গতি বেড়েছে। অবশেষে তা আছড়ে পড়ল সকাল ৮টার পরই। মৌসম ভবন জানাচ্ছে ফণীর ল্যান্ডফল হয়ে গেছে। এখন তা ক্রমে স্থলভাগে ঢুকছে। সাগর থেকে পুরো ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে প্রবেশ করতে ৩ ঘণ্টার মত সময় লাগবে। অর্থাৎ বেলা ১১টা পর্যন্ত ফণী ধীরে ধীরে প্রবেশ করবে।
ওই পুরো সময় প্রবল তাণ্ডব চলতে থাকবে। পুরীতে ঝড়ের সঙ্গে চলছে প্রবল বৃষ্টি। স্থানীয় মানুষদের অনেককেই সরিয়ে নিয়ে গেছে প্রশাসন। কিছু মানুষ ঘরেই আশ্রয় নিয়েছেন। ওড়িশা উপকূল থেকে মোট ১১ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আগেই সরানো হয়েছে।
স্থলভাগে প্রবেশের পর তার তাণ্ডবের খণ্ড চিত্র চোখে পড়লেও ক্ষয়ক্ষতি কেমন হচ্ছে তা এখনও পরিস্কার নয়। ঝড় যতক্ষণ এমন প্রবল তাণ্ডব চালাবে ততক্ষণ তার প্রভাব বোঝা মুশকিল। তবে উদ্ধারকারী দল থেকে নৌসেনার জাহাজ, ডুবুরি থেকে চিকিৎসক, পানীয় জল থেকে খাবার, সবই তৈরি। এখন ঝড়ের প্রকোপ কিছুটা কমলেই হয়তো শুরু হবে উদ্ধারকাজ।
ফণী ওড়িশার পুরী উপকূল দিয়ে ঢুকে তা উত্তর দিকে এগোবে। স্থলভাগে যত এগোবে ততই তার শক্তিক্ষয় হবে। তা ক্রমশ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়বে বিকেলের দিকে। তখন অবশ্য ঝড়ের গতি কিছুটা কমবে, তবে তাও যা থাকবে তাতে তাণ্ডব অবশ্যম্ভাবী। ফণীর গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখছেন আবহবিদরা।
(সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা)