Let’s Go

আকবরের আমলে প্রতিষ্ঠিত বাংলার এই জাগ্রত কালীমন্দির

বাদশা আকবরের রাজস্বসচিব রাজা টোডরমল চুঁচুড়া অঞ্চলটি রেখেছিলেন জায়গীরদার জিতেন রায়ের তত্ত্বাবধানে। শাক্ত জিতেন ছিলেন দেবী কালিকার ভক্ত।

হুগলি জেলার চুঁচুড়ার খড়োবাজার অঞ্চলে নেতাজি সুভাষ রোড। এরই পাশে দেবী কালিকা ‘দয়াময়ী’ নামে প্রতিষ্ঠিত আকবর বাদশার আমল থেকে। মন্দিরের প্রবেশ পথে মার্বেল ফলকে উৎকীর্ণ লিপি –

“দয়াময়ী কালী মন্দির


সেবাইত গোপালরাম পাঠক।”

প্রবেশদ্বারের ডানদিকে ভাঙা দেওয়ালের সেকেলে পাতলা ইটগুলি চেয়ে আছে হাঁ করে। এরপরে অনেকটা জায়গা জুড়ে মন্দিরপ্রাঙ্গণ। বামে পূর্বদিকে দেবী দয়াময়ীর মন্দির। এখন খানিক সংস্কারের কাজ হয়েছে দেখলাম। পাশেই পরপর দাঁড়িয়ে চারটি শিবমন্দির। নাটমন্দিরহীন দেবী মন্দিরের বাইরে ঢাকা বারান্দা। উপরের অংশ অনেকটা গম্বুজাকৃতি। ছোট ছোট সিঁড়ির ধাপের মতো উঠে গিয়েছে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত। মন্দির বিশাল নয়, তবে ভারী সুন্দর গঠনশৈলী।


বাদশা আকবরের রাজস্বসচিব রাজা টোডরমল চুঁচুড়া অঞ্চলটি রেখেছিলেন জায়গীরদার জিতেন রায়ের তত্ত্বাবধানে। শাক্ত জিতেন ছিলেন দেবী কালিকার ভক্ত। তিনিই নির্মাণ এবং দেবী দয়াময়ীকে প্রতিষ্ঠা করেন, এই জনশ্রুতি বাদশারই আমল থেকে।

গর্ভমন্দিরে দেবী কালিকার বিগ্রহ উচ্চতায় আন্দাজ দেড় থেকে পৌনে দু-হাত। কষ্টিপাথরে নির্মিত দক্ষিণাকালী। দেবীর সামনের দিকে দিগম্বর মহাদেবের মাথা। সাদা ধবধবে পাথরের বেদিতে মহাদেব শুয়ে আছেন দয়াময়ীর পদতলে শবাসনে। কুচকুচে কালো নয়, হাল্কা খয়েরি আভাযুক্ত কালোপাথরে নির্মিত দেবী বিগ্রহের আকর্ষণই আলাদা। টিকালো নাক। এলোকেশীর কেশদাম হাঁটু ছাড়িয়ে। বিগ্রহের মুখমণ্ডল সামান্য লম্বাটে, গোলাকার নয়। দেবীর ত্রিনয়ন এবং জিহ্বা স্বর্ণমণ্ডিত। কণ্ঠহার মুণ্ডমালা, হাতের খড়গ রুপোয় তৈরি।

Dayamoyee Kali Mandir Chinsurah

অপরূপা দয়াময়ীর দয়ার যেন কোনও অন্ত নেই। সেই জন্যই তো দূর দূরান্ত থেকে অগণিত ভক্তের প্রতিদিন সমাগম ঘটে দেবীর শ্রীচরণে পুজাঞ্জলি নিবেদন করতে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button