শোনার ভুলে শয়তানের স্তম্ভ, কাহিনি বলে ২ বালিকাকে বরং রক্ষা করে এই পাহাড়
এ এমন এক পাহাড় যার নাম শয়তানের পাহাড় হয়ে গেল কেবল শোনার ভুলে। তবে তা এখনও সেই নামেই পরিচিত। যদিও প্রচলিত কাহিনি একদম অন্য কথা বলে।
একবার ২ বালিকাকে বেশ কয়েকটি ভাল্লুক তাড়া করে। ভাল্লুকের হাত থেকে বাঁচতে তারা ছুটতে থাকে। ছুটতে ছুটতে তারা একটি পাথরের ওপর এসে বসে পড়ে। তারপর সেখানেই হাঁটু গেড়ে বসে তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে।
বালিকাদের সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ঈশ্বর তখন ওই প্রস্তর খণ্ডটিকে ক্রমে উপরের দিকে লম্বা করতে থাকেন। ২ বালিকা দেখে তারা ক্রমে উপরে উঠছে। যে পাথরের ওপর তারা বসে আছে তা ক্রমে লম্বা হয়ে যাচ্ছে। যাতে ভাল্লুকরা তাদের নাগাল না পায়।
এদিকে সেই প্রস্তরখণ্ড তো লম্বা হয়ে পাহাড় হয়ে যায়। ভাল্লুকরাও ছাড়ার পাত্র নয়। তারা সেই পাহাড়ের গায়ে নখ দিয়ে আঁচড় কেটে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যায়।
তাতেই পাহাড়ের গায়ে লম্বা লম্বা দাগ পড়ে যায়। যা আজও রয়েছে। আমেরিকার কিওয়া ও লাকোটা নামে ২ উপজাতির মানুষের মুখে মুখে ঘোরে এই কাহিনি। ডেভিলস টাওয়ারের কথিত কাহিনি।
এ পাহাড়কে ডাকা হয় ডেভিলস টাওয়ার বা শয়তানের স্তম্ভ বলে। পাহাড়টি চেহারার দিক থেকেও অদ্ভুত। কালচে রং। কেমন যেন খাড়াই হয়ে উঠে গেছে উপরে। গায়ে উপর থেকে নিচে পর্যন্ত লম্বা লম্বা দাগ ও খাঁজ।
৫ হাজার ১১২ ফুট উঁচু এই পাহাড়টি মার্কিন মুলুকের ক্রুক কাউন্টিতে। একটি অভিযানের সময় এক দোভাষীর কথার ভুলে আদপে এক পবিত্র পাহাড়ের নাম ডেভিলস টাওয়ার হয়ে যায়। যা বদলের দাবিও ওঠে।
কিন্তু কোনও কারণে আজও এই নামই রয়ে গেছে। তবে কেউ কেউ একে শয়তানের স্তম্ভ নামে ডাকতে নারাজ। তাঁরা এর নাম দিয়েছেন বেয়ার লজ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় স্মারক হিসাবে প্রথম যদি কোনও কিছুকে বেছে নেওয়া হয়ে থাকে তবে তা ডেভিলস টাওয়ার। ১৯০৬ সালে এই পাহাড়কে মার্কিন মুলুকের প্রথম জাতীয় স্মারকের মর্যাদা প্রদান করা হয়।
এখন এই পাহাড় সকলের কাছেই এক পবিত্র পাহাড়। ডেভিলস টাওয়ার নরম গলে যাওয়া পাথরের তৈরি। তবে তা লম্বা লম্বা স্তম্ভের মিলনে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। এখন এই পাহাড় পর্বতারোহীদের আকর্ষণীয় স্থান।