ফুটবলের রাজপুত্র আর নেই, চলে গেলেন দিয়েগো মারাদোনা
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শোকের দিন হয়ে গেল বুধবার। চলে গেলেন ফুটবলের কিংবদন্তী দিয়েগো মারাদোনা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
বুয়েনোস আইরেস ও কলকাতা : বিশ্ব ফুটবল জগতে বহু খেলোয়াড় তাঁদের অনন্য ছাপ রেখেছেন। তবে কিংবদন্তী হতে পেরেছেন ২ জনই। পেলে ও মারাদোনা। একজন যদি ফুটবলের সম্রাট হন তো অন্যজন ছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র। সেই ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা চলে গেলেন। মাত্র ৬০ বছর বয়সে মৃত্যু হল তাঁর।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় মারাদোনার। কিছুদিন আগেই মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। সুস্থও হয়ে ওঠেন। বাড়িও ফেরেন। তাঁর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভক্তকুলের উদ্বেগ কাটে। কিন্তু তারপরই এমন এক আকাশ ভেঙে পড়া খবরে তাঁর অগুন্তি অনুরাগী হতবাক, শোকস্তব্ধ।
আর্জেন্টিনা মাত্র ২ বারই ফুটবলের বিশ্বকাপ হাতে তুলেছে। আর তার একটি তুলেছিল একা দিয়েগো মারাদোনার পায়ের যাদুতে। একার কৃতিত্বে দেশকে বিশ্বজয়ের মর্যাদা পাইয়ে দিয়েছিলেন মারাদোনা। ফুটবল জগতে এই নামটা এক অন্য জায়গা তৈরি করেছিল।
মারাদোনা মানেই চোখ জুড়নো ফুটবল। মনে রাখার মত ড্রিবল। একক চেষ্টায় ১১ জন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে তাঁর দেওয়া গোল এখনও ফুটবলের অনেক তাবড় ব্যক্তিত্বকে হতবাক করে দেয়।
মারাদোনার পায়ের সঙ্গে ফুটবল থাকত আঠার মত সেঁটে। জীবনে দেশকে বড়ই ভালবেসে ফুটবল খেলেছেন মারাদোনা। পরবর্তীকালে কোচও হন দেশের, ক্লাবের।
২ সপ্তাহ আগেও যখন তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন গোটা বিশ্ব তাঁর আরোগ্য কামনা করে প্রার্থনা করেছে। সেই মানুষটা মাত্র ২ সপ্তাহ পরে এক নিমেষে শেষ হয়ে গেলেন।
হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আর সময় পাওয়া গেলনা মারাদোনাকে সুস্থ করে তোলার। আর্জেন্টিনা তো বটেই সারা বিশ্বের জন্য দিনটা শোকের হয়ে গেল। এমন এক ব্যক্তিত্বের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। বহু মানুষ চোখের জল ফেলছেন।
মারাদোনা কলকাতাতেও পা রাখেন। ২০০৮ সালে কলকাতায় আসেন দিয়েগো মারাদোনা। ফুটবলে পাও ছোঁয়ান। হাজির হন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে।
ভারতীয় ফুটবলের মক্কা বলে পরিচিত এই বাংলায় এসে মারাদোনা জানিয়েছিলেন তিনি খুশি। এখানকার ফুটবল উন্মাদনা তাঁকে মুগ্ধ করে।
১৯৮৬ সালের পর বাংলার ফুটবলমোদী মানুষ শুধুই পেলেকে আর শ্রেষ্ঠ হিসাবে চিনতেন না, গোটা বিশ্বের মত মারাদোনাকেও শ্রেষ্ঠ হিসাবে মেনে নিতেন। মারাদোনার হাত ধরেই বিশ্বে আর্জেন্টিনার ফ্যান তৈরি হয়।
ফুটবলের সেই রাজপুত্র এদিন চলে গেলেন সকলকে কাঁদিয়ে। ফুটবলের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল তাঁর চলে যাওয়ার সঙ্গে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা