ডোকলাম সীমান্ত ও এনএসজি-র সদস্যপদ, আশা করি ভারত-চিন দ্বন্দ্বের একটা গন্ধ এতক্ষণে নিশ্চয়ই পেয়ে গেছেন। সেই গন্ধের ঝাঁঝই দীপাবলির প্রাক্কালে সীমানা পেরিয়ে কলকাতার এজরা স্ট্রিটে আলোর বাজারেও এসে পড়েছে। ভারত বনাম চিনের টক্করের লাইভ টেলিকাস্ট দেখতে হলে আসতেই হবে এখানে।
একটা কথা না মেনে উপায় নেই যে আলোর বাজারে চিনা ড্রাগনের হুঙ্কার এবারও অব্যাহত। চোখ ধাঁধানো আলোয় আবারও টেক্কা দিচ্ছে চিনের রকমারি সামগ্রি। ভারতীয় আলোকসামগ্রি প্রস্তুতকারকরা বাজার দখলের লড়াইতে সচেষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কাজের কাজ বিশেষ হয়নি। বাস্তব পুরো অন্য কথা বলছে। দোকানদারদের বক্তব্য বাজারে ভারতীয় পণ্য বলে কার্যত কোনও কিছুর অস্তিত্বই নেই। সাধারণ মানুষের চাহিদাও চৈনিক আলোয় গৃহকোণ সাজানোর পক্ষেই রায় দিচ্ছে। এছাড়াও চিনা আইটেমের দরের সাথে ভারতীয় সামগ্রীর পাল্লা দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এরই মধ্যে বাবলু সোম নামে এক বিক্রেতা মুচকি হেসে এক চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন। তাঁর দাবি, ‘মেড ইন চায়না’-র ওপরেই ভারতীয় নানা সংস্থা নাকি ট্যাগ মেরে চুটিয়ে মাল বিক্রি করছে!
এই পর্যন্ত পড়ে আলোর বাজারে চিনা একাধিপত্যের যে ছবিটা ফুটে উঠেছে তার পাশে দাঁড়িয়ে সমানতালে না হলেও টক্করের একটা চেষ্টা কিন্তু ভারতীয় সামগ্রি দিচ্ছে। খুব ধীরে হলেও ক্রমশ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে ভারতীয় সিংহ। বিক্রেতা চঞ্চল সাহা জানালেন তাঁর দোকানে দেশীয় আলোর হয়ে মূল লড়াইটা দিচ্ছে দিল্লি ও মুম্বইয়ের বিভিন্ন সংস্থা। আরেক বিক্রেতাও জানালেন সব হিসেব ওলট-পালট করে তাঁর দোকানে নাকি ভারতীয় আলোর চাহিদা তুঙ্গে।
ক্রেতাকুলের সিংহভাগ কিন্তু ভারত-চীন বিতর্কে জেতেই নারাজ। তাঁদের মতে, যে আলো সুন্দর সেই আলোই তাঁরা কিনবেন। যে আলো দামে পোষাবে, আবার মনও ভরাবে তাঁরা সেদিকে। সে চিনা না ভারতীয়, তাতে তাঁদের কিছু যায় আসে না। এখন এই মন আর পকেট দুদিক থেকেই সকলের মন ভরিয়ে দেওয়ার কাজটা ভারতীয় প্রস্তুতকারকরা যেদিন করে উঠতে পারবেন, সেদিন চিনা সামগ্রি কতটা থৈ পাবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ ইতিমধ্যেই বাজারে ভারতীয় জিনিসের চাহিদা কিন্তু উর্ধ্বমুখী। চ্যালেঞ্জ একটাই, চিনা বাজারকে টক্কর দিতে গেলে সস্তায় মন ভরানোর মন্ত্র রপ্ত করতে হবে ভারতীয় প্রস্তুতকারকদের।