বিশ্বসেরা ভারত, চিনকে হারিয়ে সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন ডি গুকেশ
বিশ্বনাথন আনন্দের পর দ্বিতীয় দাবা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পেল ভারত। চিনের ডিং লিরেনকে হারিয়ে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন ডি গুকেশ।
রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষে শেষ হাসি হাসলেন ভারতের ১৮ বছরের কিশোর ডি গুকেশ। বিশ্ব দাবায় তৈরি করলেন ইতিহাস। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন গুকেশ। ১১ তম ম্যাচ জেতার পর বাকি ৩টে ড্র করতে পারলেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, এই পরিস্থিতিতে গুকেশ দ্বাদশ ম্যাচ হেরে যান। কেঁদেও ফেলেন খেলার শেষে।
এদিকে দাবা বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন যদি ১৪ ম্যাচে ফয়সালা না হয় তাহলে কিন্তু ব়্যাপিড দাবায় ফয়সালা হবে। আর তাতে এগিয়ে থাকবেন চিনের ডিং লিরেন। ফলে গুকেশকে বাকি ২টির মধ্যে একটি জিততে হবে। সেটাই সহজ পথ।
১৩ নম্বর ম্যাচও ড্র হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য সকলেই ধরে নিয়েছিলেন তাহলে বোধহয় আশা শেষ। এমনকি ১৪ তম ম্যাচ যখন মিডল গেমে তখন প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভ্লাদিমির ক্রমনিক ভবিষ্যতবাণীও করে দেন যে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই হয়তো টাইব্রেকারেই যাচ্ছে।
কিন্তু দাবার বোর্ডে যতক্ষণ না ড্র হচ্ছে ততক্ষণ যেকোনও দিকে যেতে পারে খেলা। একটা ভুল খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। আর সেটাই করে বসলেন লিরেন।
মাত্র ৫ সেকেন্ড খরচ করে একটি ঘোড়ার চাল এমন দিলেন যে গুকেশ সেখান থেকেই পজিশনাল অ্যাডভান্টেজ তৈরি করে নেন। তারপর টুঁটি টিপে ধরার মত ক্রমশ গুকেশ বোর্ডে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন।
এন্ড গেমে পৌঁছে ১টি বোড়ে বেশি হয়ে যায় তাঁর। কিন্তু বিশপ নাইট এন্ডিং-এ কিং সাইডে একটা বোড়ে বেশি থাকা কম ক্ষেত্রেই জয় পরাজয় নির্ধারিত করে। বরং ড্র হয়ে যায়।
সেটা কিন্তু এক অসামান্য এন্ডিং খেলে হতে দেননি গুকেশ। স্নায়ুর চাপকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে একের পর এক সঠিক চাল, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন বোর্ডে।
অবশেষে খেলা কিং পন এন্ডিং-এ গড়ালে লিরেন বুঝে যান এ খেলা তাঁর হাত থেকে বেরিয়ে গেছে। পরাজয় শিকার করে নেন তিনি। সেই সঙ্গে হাতছাড়া হয় বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তকমা।
শেষ গেমে রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়ে গুকেশ এখন দাবা বিশ্বে এক ইতিহাস রচনা করা তারকা। যিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সে দাবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখিয়ে দিলেন। যা বিশ্বনাথন আনন্দ, গ্যারি কাসপারভ, ম্যাগনাস কার্লসেনরাও পারেননি।