অবশ্যই মঙ্গলবারটা পৃথিবীর ইতিহাসে একটা ঐতিহাসিক দিন। কারণ সিঙ্গাপুরে এদিন প্রায় ১ ঘণ্টা বৈঠক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন। কদিন আগেও যাঁদের বাকযুদ্ধ, হুমকি, হুঁশিয়ারি বিশ্ববাসীকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনার কালো ছায়া দেখাচ্ছিল। একদিকে আমেরিকাকে তাক করে পরমাণু অস্ত্র ছোঁড়ার ভয় দেখাচ্ছিলেন কিম। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়াকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন ট্রাম্পও। এমন ২ যুযুধান শক্তি যে নিজেদের মধ্যে কখনও শান্তির আলোচনায় বসতে পারেন, তা এদিনের বৈঠক না দেখলে হয়তো বিশ্বাস হত না।
মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের একটি বিলাসবহুল হোটেলে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উন। হাসিমুখে একে অপরের করমর্দন করে বুঝিয়ে দেন অতীতের সেই কালো সময় অতিবাহিত। সেখানে বিশ্ব দেখতে চলেছে একদম নতুন এক সমীকরণ। ২ রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের পর ২ দেশের কূটনীতিকরাও একসঙ্গে বসেন। কোনও আগাম ইঙ্গিত না থাকলেও দু’পক্ষে চুক্তি সাক্ষরিত হয়।
যেটুকু ২ রাষ্ট্রনায়ক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তা সামান্যই। তবে এটুকু জানা গিয়েছে আমেরিকা এতদিন যেভাবে কোরিয়ান খাঁড়িতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়া চালাচ্ছিল তা বন্ধ হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকা ৩০ হাজার মার্কিন সেনাকেও তুলে নিচ্ছে ওয়াশিংটন। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়াও তাদের একটি অন্যতম প্রধান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষণ কেন্দ্র নষ্ট করে দেবে বলে কথা দিয়েছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কাজও দ্রুত শুরু হবে বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। এছাড়া তাঁর দাবি, ২ দেশের মধ্যে সম্পর্ক আগামী দিনে আরও দৃঢ় হতে চলেছে। অতীতে যা হয়েছে তা ভুলে আগামী দিনে বিশ্ব এক বিশাল পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে বলে দাবি করেন কিম।
জানা গিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কিমকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কিম নিজে কিছু নিশ্চিত না করলেও ট্রাম্প দাবি করেছেন কিম তাঁর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। তিনি ওয়াশিংটনে আসবেন বলেও কথা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে যদি এই ২ দেশ নিজেদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করে, তবে তা শুধু এই ২ দেশের মানুষ বলেই নয়, গোটা বিশ্ববাসীর জন্যই মঙ্গলের। তবে কিম-ট্রাম্প বৈঠক যদি অন্য সম্পর্কের সমীকরণ তৈরি করে তবে বর্তমানে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে যে সম্পর্কের সমীকরণ রয়েছে তা কিছুটা বিঘ্নিত হতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞেরা।