নামে ড্রাগন, নতুন ফলে মজেছে দেশ
নামের মধ্যে লুকিয়ে আছে ড্রাগন। নামকরণে মুখ থেকে আগুন বার করা এক কাল্পনিক প্রাণি থাকলেও মুখে দিলে এ ফল সুস্বাদু। গুণাগুণেও ভরপুর।
ভারত শস্য শ্যামলা দেশ। নানা ধরনের শাকসবজি ও ফলমূলের পীঠস্থান ভারত। আম, জাম, কাঁঠাল থেকে নানা ধরনের ফলের ফলন হয় এই দেশের বিভিন্ন কোণায়। তবে অন্যান্য গ্রীষ্ম প্রধান দেশের ফলের চাষও এখন বাড়ছে। সেই উদ্যোগে শামিল হয়ে বিভিন্ন অপ্রচলিত শস্য ও ফলমূলকে নিয়ে উৎসবের আয়োজন করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
সম্প্রতি স্ট্রবেরি উৎসব পালিত হল উত্তরপ্রদেশে। এই উৎসবের সফলতার কথা মাথায় রেখে আরও নানা ধরনের ফল, সবজি নিয়ে উৎসব আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যোগী রাজ্যে। গোরক্ষপুরে এই উৎসবের দ্বিতীয় পর্বটি উদযাপিত হতে চলেছে। উৎসবের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ড্রাগন ফ্রুটকে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ড্রাগন ফ্রুটের ঔষধীয় গুণাবলির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাঁর আধিকারিকদের ড্রাগন ফ্রুট নিয়েও উৎসবের আয়োজন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ড্রাগন ফ্রুট পুষ্টি ও গুণাগুণে ভরপুর একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ ও সি রয়েছে। কিন্তু এতে ফ্যাটের পরিমাণ কম, তাই ওজন বৃদ্ধির চিন্তা ভুলে যে কেউ এই ফলের স্বাদ নিতে পারেন।
এটি প্রধানত মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার গ্রীষ্ম প্রধান অঞ্চলে পাওয়া যায়। তবে বিশ্বের নানা দেশে ও প্রধানত এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই ফলের রমরমা বাজার। তাই ওই দেশগুলিও এই ফলের চাষ করে থাকে।
ভারতের ফলের ঝুড়িতে ড্রাগন ফ্রুট অবশ্য নতুন সংযোজন। সুলতানপুর জেলার লম্ভুয়ার বাসিন্দা গয়া প্রসাদ সিং-এর উৎসাহে বারাবাঁকি ও কুশিনগরের কিছু চাষি এই ড্রাগন ফ্রুটের চাষ শুরু করেছেন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে রাঙা আলু, স্ট্রবেরি, ড্রাগন ফ্রুটের গুণাগুণ সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করেন। সে সময়ই তিনি গয়া প্রসাদ সিং-এর নাম উল্লেখ করে দেশে ড্রাগন ফ্রুটের চাষের কথাটি জানান।
গয়া প্রসাদ সিং-এর মতে এই ড্রাগন ফ্রুট চাষ কৃষকদের আয় বর্তমানের তুলনায় ৮ গুন বাড়াতে পারে। ওলেরিকালচারিস্ট এস পি সিং জানিয়েছেন ৭ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ড্রাগন ফ্রুট চাষ করা যায়। তবে ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এই চাষের উপযোগী তাপমাত্রা।
চারা গাছ পোঁতার সময় প্রতিটা গাছের মধ্যে ৪ মিটারের দূরত্ব থাকা আবশ্যক। ড্রাগন ফ্রুট জুন-জুলাই ও ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে চাষ করা যায়। গাছ পোঁতার ২ বছর পর থেকে গাছে ফলন শুরু হয়।
একটি গাছ ২০ থেকে ২৫ বছর অবধি ফল দিতে সক্ষম। লাল, গোলাপি ও হলুদ, এই ৩ প্রজাতির ড্রাগন ফ্রুট দেখতে পাওয়া যায়।
যোগী সরকার ফলের চাষ ও ফল খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করতেই এই ফলের উৎসবের আয়োজন করছে। ইতিমধ্যে প্রয়াগরাজে পেয়ারা, কুশিনগরে কলা আর প্রতাপগড়ে আমলকি উৎসবের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা