World

মরু দেশে ১৪ বছরের ‘বনবাস’ সেরে দেশে ফিরলেন ভারতীয়

মরু দেশে কার্যত বনবাস সেরে ফিরলেন এক ভারতীয়। ২৭ বছর বয়সে গিয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। অবশেষে ১৪ বছর পর এই বনবাস দশা থেক মুক্তি মিলল তাঁর।

দুবাই : সংযুক্ত আরব আমিরশাহী-র একটি সংস্থায় কাজে গিয়েছিলেন তিনি। ২০০৬ সালের কথা। তখন তাঁর বয়স ছিল ২৭ বছর। ঝকঝকে তরুণ দুবাইতে বিমান থেক অবতরণ করার পর তিনি যাচ্ছিলেন তাঁর অফিসে। সেখানে কাজ সেরে তাঁর ফের ভারত ফেরার কথা ছিল। আর ঠিক তখনই ঘটে যায় এক ভয়ংকর দুর্ঘটনা।

ওই যুবক অফিসের পাঠানো গাড়িতেই যাচ্ছিলেন। সেই গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। গুরুতর আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এই দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ তিনি চান তাঁর সংস্থার কাছে।


এখানেই শুরু হয় ভাস্করি রাঘবলু-র লড়াই। সংস্থা থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর এক আইনজীবীকে নিযুক্ত করেন।

আইনজীবী তাঁর পাসপোর্ট নিয়ে নেন। কিন্তু তারপর তিনি আর সেই পাসপোর্ট ফেরত দেননি। বরং আচমকা বেপাত্তা হয়ে যান ওই আইনজীবী।


বিদেশে চরম সমস্যার মুখে পড়েন রাঘবলু। হাতে পাসপোর্ট নেই। এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী-তে থাকার সময়সীমাও তখন অতিক্রান্ত হয়েছে।

ভারতে তাঁর পরিবার তাঁর পথ চেয়ে বসে আছে। কিন্তু দেশে ফেরার উপায় নেই। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা ছিলেন যখন তিনি আসেন। ততদিনে সন্তান বড় হতেও শুরু করেছে। এটুকু খবর পেয়েছেন যে তাঁর কন্যাসন্তান হয়েছে।

মরিয়া হয়ে ওঠেন রাঘবলু। যেভাবেই হোক দেশে ফিরতে হবে তাঁকে। কিন্তু কোনও চেষ্টাই কাজ করেনি। বিশেষত সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে বেশি দিন থাকার ফলে তাঁর যে জরিমানা হচ্ছিল তার অঙ্ক উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছিল।

রাঘবলুর সংস্থা তাঁর কোনও দায়িত্বই নেয়নি। ফলে সেখানে জীবন চালাতে শ্রমিকের কাজ করতে শুরু করেন রাঘবলু। তাই দিয়েই চলে জীবিকা নির্বাহ।

এমন করে একটা একটা করে বছর পার হতে থাকে। রাঘবলু কিন্তু হাল ছাড়েননি। দেশে ফেরার সব চেষ্টা চালাতে থাকেন। কিন্তু বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিশাল অঙ্কের জরিমানা। যা না মেটানো পর্যন্ত তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেননা।

অবশেষে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় সমাজকর্মী শীলা থমাসের। শীলা থমাসই উদ্যোগ নিয়ে তাঁর ৫ লক্ষ ১১ হাজার ২০০ দিরহাম বা ভারতীয় মুদ্রায় ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা মেটানোর বন্দোবস্ত করে দেন। রাঘবলুর দেশে ফেরার টিকিটেরও বন্দোবস্ত করে দেন তিনি।

শনিবার রাঘবলু ১৪ বছর পর অবশেষে মুম্বই ফিরলেন। ফিরে তিনি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে উদগ্রীব। মেয়ের মুখ দেখবেন বলে মুখিয়ে ৪১ বছর বয়সের রাঘবলু। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button