Durga Pujo

পরিবার ছেড়ে পুজোয় দূরে থাকার বেদনাটা থেকেই যায়!

পুজোয় বাড়ি থাকা হয়না ওঁদের। পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে পুজো কাটানোর অভিজ্ঞতাটা কেমন তা প্রায় ভুলতে বসেছেন তাঁরা। ঢাকের আওয়াজে যখন সবাই পরিবারের সঙ্গে আনন্দে মশগুল, তখন তাঁরা বাড়ি থেকে অনেক দূরে কোনও অচেনা পরিবেশে ব্যস্ত মাতৃপ্রতিমার সামনে ঢাক বাজাতে। ওঁরা পেশায় ঢাকি। যাঁদের হাতের বোল ছাড়া সম্পূর্ণ হয়না মা দুর্গার উপাসনা। ওটা না হলে আমরাও পাই না পুজোপুজো আমেজ।

এঁদের বাস গ্রামেগঞ্জে। কিন্তু মহালয়ার পরেই তাঁরা রুটিরুজির আশায় চলে আসেন কলকাতা শহরে। ঢাকের বায়নার আশায়। যতক্ষণ বায়না না হয় ততক্ষণ বসে থাকেন শিয়ালদহ প্লাটফর্মে। মাঝে মাঝে ঢাক বাজিয়ে জানান দেন নিজেদের উপস্থিতি। তারপর কেউ এসে বায়না করে নিয়ে যান, কেউ বা বায়নার আশ্বাস দিয়ে যান। এভাবেই পুজো শুরু হয় এঁদের।


এবার শিয়ালদহ চত্বরে গিয়ে দেখা মিলল অনেক এমন ঢাকির, যাঁর অপেক্ষা করছেন বায়নার। নদিয়ার আড়ংঘাটা থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে এসে বায়নার অপেক্ষায় বসে আছেন বিপ্লব দাশ, সুশান্ত দাশ, সুভাষ দাশ, সাগর দাশের মত আরও অনেকে। তাঁরা জানালেন, পুজোয় সবাই আনন্দ করে। তাঁদের বাড়ির সবাইও পুজোয় মাতেন। কিন্তু তাঁদের চলে আসতে হয়। বংশপরম্পরায় এটা হয়ে আসছে।

রুটি–রুজির প্রশ্ন। বায়না সবারই হয়। কারও আগে, কারও পরে। আসলে কলকাতায় রোজগারটা বেশি। বায়না হলে যে টাকা এখানে জোটে গ্রামে সেই টাকা মেলে না। তাই এখানে আসা। কিন্তু কোনটা লাভ, প্যান্ডেলের পুজোয় না বাড়ির পুজোয়?


তাঁরা জানালেন, বাড়ির পুজোর থেকে প্যান্ডেলের পুজোয় লাভ বেশি। পুজোর শেষে আশপাশ থেকে উপরিও কিছু জুটে যায়। সব মিলিয়ে পুজোয় তাঁদের অর্থলাভ নিয়ে ক্ষোভ নেই। তবে পরিবার থেকে পুজোয় দূরে থাকার বেদনাটা থেকেই যায়।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button