মহাষ্টমীর রাতটা পার করলেই মনটা কেমন যেন করে। একটা দিন আর হাতে। রাত পোহালেই বিদায়ের ঘণ্টা। মা ফিরবেন কৈলাসে। আবার একটা বছরের অপেক্ষা। সেটাই তো নিয়ম। তাই মনকে বুঝিয়ে বাঙালি মেতে ওঠে। মহানবমীর হুল্লোড়টা সকাল থেকেই চেটেপুটে উপভোগ করে নেয়। সকাল থেকেই শুরু হয় নবমী পুজো। তারপর হোম, কুমারী পুজো। অষ্টমীর মত না হলেও অনেক প্যান্ডেলেই এদিন সকাল থেকে পাড়া প্রতিবেশিদের ভিড় নজর কেড়েছে। কেউ পুজো দিয়েছেন। কেউ হোমের সময় সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন।
অনেকে আবার সকাল থেকেই বেরিয়ে পড়েছেন ঠাকুর দেখতে। সকালটা ঠাকুর দেখে পরিবার নিয়ে বেলায় বেলায় ফিরে যান বাড়িতে। সন্ধের ভিড়টা সহ্য করতে হয়না। আবার অনেকে সকাল থেকেই বিশ্রামে। সন্ধের জন্য যাবতীয় এনার্জি জমিয়ে রাখা। তারপর সূর্য্যি পাটে গেলেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়া। সন্ধেয় প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে বাড়তি পাওনা আলোর খেলা। আলোয় ভেসে যাওয়া চারপাশে তখন হাজারো মানুষের এক মিলনোৎসব। নবমী নিশি যতই ঘনিয়ে আসে আনন্দের পারদ যেন চড়তে থাকে। চুটিয়ে আনন্দ করে নেওয়ার জন্য মনটা যেন একটু বেশিই তাড়াহুড়ো শুরু করে দেয়। হবে নাই বা কেন! রাত পার করেই যে দশমীর বিষাদ। আবার একটা বছরের অপেক্ষা।
বিষাদের কথা অবশ্য নবমীর সকালে না বলাই ভাল। সময় এখনও অনেকটা বাকি। অনেক আনন্দ করা বাকি। খাওয়াদাওয়া বাকি। কারণ নবমী মানেই কিন্তু বহু পরিবারে মাংসের পদ। সে চিকেন হতে পারে, অথবা মাটন। সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন পাঁঠার মাংসের দোকানে লম্বা লাইন নজর কেড়েছে। নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই নবমীর দিন এই ছবি ধরা পড়ে।
অনেক বারোয়ারিতেও এদিন খাওয়া দাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে। অনেক আবাসনের পুজোতেও তাই। এই একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া, সে পরিবারের সঙ্গেই হোক বা আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে বা পড়শিদের সঙ্গে। এই আনন্দটা পাথেয় হয়ে থাকে সারাটা বছর। এটাই তো উৎসবের সবচেয়ে বড় পাওনা। ঠাকুর দেখা, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরা, আলো দেখার সঙ্গে সঙ্গে এটা একটা মিলনোৎসব। আর সেটাই সবচেয়ে বড় পাওনা বাঙালির দুর্গাপুজোয়।