সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় আকাশ কালো করে ঝেঁপে বৃষ্টি কলকাতা শহরের পুজো শেষের ক্লান্তিতে একটা ঝিমুনিও যোগ করে দিয়েছিল। যা রাস্তা ঘাটেও ছিল স্পষ্ট। বাস-ট্রাম প্রায় নেই। গাড়িও কম। বাইক-স্কুটারও বড় একটা নজরে পড়ছিল না। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণের বহু রাস্তাই জলের তলায় চলে গিয়েছিল। মাথায় হাত পড়েছিল যেসব পুজো কমিটি এদিন ভাসানের স্থির করেছিল তাদের। তবে বিকেলের পর মেঘ কেটে যায়। শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জনের তৎপরতা।
বুধবার সন্ধেয় এক বৈপরীত্যের ছবি ধরা পড়েছে শহর কলকাতায়। ভিজে রাস্তা ধরে একদিকে যেমন প্রতিমা নিয়ে গঙ্গার দিকে এগিয়েছে অনেক বারোয়ারি। তেমনই আবার অন্যদিকে অনেক প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখার ভিড় সন্ধে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে। শ্রীভূমি থেকে চেতলা অগ্রণী, উত্তর থেকে দক্ষিণ অনেক বড় পুজোর প্রতিমাই রয়ে গিয়েছে। আর সেসব প্যান্ডেলে একাদশীতেও উপচে পড়া ভিড় নজর কেড়েছে। এমনও হয়েছে যে একটা প্যান্ডেলে মানুষ ভিড় করে ঢুকছেন ঠাকুর দেখতে, আর তার সামনে দিয়েই নিরঞ্জনের জন্য গঙ্গার দিকে শোভাযাত্রা সহকারে এগিয়ে যাচ্ছে অন্য বারোয়ারির প্রতিমা। তবে এদিন সন্ধেয় ভাসানের পাশাপাশি ঠাকুর দেখার উৎসাহ পুজোকে যেন শেষ হয়েও হতে দেয়নি।
বুধবার অনেক প্যান্ডেলেই সিঁদুর খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গে অনেক জায়গায় ছিল ধুনুচি নাচের আয়োজন। নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজো মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো নামেই খ্যাত। সেখানে এদিন লাল পাঞ্জাবী আর ধুতি পরে একটি শতবর্ষ পুরনো ভিন্টেজ গাড়িতে চড়ে হাজির হন পার্থবাবু। জীবনে হাতে গোনা বার ধুতি পড়েছেন তিনি। তারমধ্যে এদিন ছিল একটি। এদিন মণ্ডপে বসে সিঁদুর খেলা দেখেন। বেশ খোশমেজাজেই ধরা পড়েছেন এই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। অন্যদিকে হিন্দুস্তান ক্লাবের পুজোর মুখ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনিও এদিন সিঁদুরে রাঙা হয়ে পা মেলান অন্য মহিলাদের সঙ্গে। মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলা ও নাচের আনন্দে।