মহাষষ্ঠীতে অসুর আকাশ
একেই করোনা আবহে পুজো এবার ম্লান, জৌলুসহীন। তারমধ্যে আবার উপরি যোগ হয়েছে বেজার মুখের আকাশ। যা উৎসবকে আরও ম্লান করে দিয়েছে।
কলকাতা : সারা বছরের অপেক্ষা শেষ হল ঠিকই। দিনটাও এল। কিন্তু মানুষের মনে আনন্দটাই উধাও হয়ে গেছে। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আজ মহাষষ্ঠী। পুজোর শুরু। কিন্তু প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে সেই উৎসাহটা নেই। এমনকি পাড়াপড়শিরও দেখা নেই।
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে প্যান্ডেলে প্রবেশে কড়াকড়ি রয়েছে। প্যান্ডেলে প্রবেশাধিকারের সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে আদালত। কিন্তু সেটুকু মানুষেরও অনেক প্যান্ডেলে দেখা নেই।
তারওপর উৎসবে মনের মধ্যে যে আনন্দটুকু নিয়ে এ বছরটা কাটাতে পারতেন সকলে সেই আনন্দটুকুও অনেকটা কেড়ে নিয়েছে গোমড়া মুখের আকাশ।
মহাষষ্ঠীর সকালে একটা ঝলমলে দিন চেয়েছিলেন সকলে। কিন্তু তা হল কই! ভোরে ঘুমই ভাঙল মেঘে ঢাকা আকাশে। সঙ্গে একটা ভেজা হাওয়া।
আবহাওয়া দফতর অবশ্য আগেই জানিয়েছিল পুজোয় বৃষ্টি হবে এবার। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপের প্রভাবে পুজোর দিনগুলোতে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছেই। তাই হলও। একদম পুজো শুরু, বৃষ্টি শুরু।
তিথি অনুযায়ী মহাষষ্ঠী আগেই পড়ে গেছে। গত বুধবারই মহাষষ্ঠী তিথি পড়ে যাওয়ায় অনেকেই সন্ধেয় অধিবাস সম্পূর্ণ করেছেন। অনেক বারোয়ারিতেই পুজো হয়ে গেছে। অনেকে এদিন সকালেও অধিবাস করছেন। চলছে অস্ত্রদান।
এবার পুজোয় কোনও বারোয়ারিই খামতি রাখছে না। কিন্তু বাকিটা বড়ই ম্লান। পুজোর আনন্দটাই কে যেন চুরি করে নিয়ে গেছে। করোনা এবার বাঙালির এই কটা দিনের আনন্দেও গ্রহণ দিয়ে গেল।
হাইকোর্টের নির্দেশে এবার পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঠাকুর দেখার সুযোগ প্রায় নেই। ফলে পুজোর বাজারে যে ভিড় নজরে পড়েছিল, সে ভিড় পুজোয় হওয়ার সম্ভাবনা কম।
করোনা বিধি পুজোর বাজারে লাটে উঠেছিল। পুজোর দিনগুলোয় সেই বিধি অন্তত কার্যকর হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশও আদালতের নির্দেশ যাতে কার্যকর হয় সেদিকে কড়া নজর দিয়েছে।
বারোয়ারিগুলিও আদালতের নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই প্যান্ডেল ঘিরে দিয়েছে। সব মিলিয়ে এমন জৌলুসহীন মহাষষ্ঠী শেষ কবে দেখা গিয়েছিল তা কার্যত মনেও করতে পারছেন না বঙ্গবাসী।