ষষ্ঠীর অচেনা সন্ধে দেখল কলকাতা
দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর দিনের সন্ধে সম্বন্ধে কলকাতাবাসীকে নতুন করে বলার কিছু নেই। তাই ফারাকটাও তাঁদের চোখে পরিস্কার। এদিন এক অচেনা ষষ্ঠীর সন্ধে দেখল কলকাতা।
শহরে এখন পুজো মানে কার্যত দ্বিতীয়া থেকেই রাস্তায় মানুষের ঢল। অনেক পুজোর উদ্বোধনও তখনও হয়না। কিন্তু তার আগেই শুরু হয়ে যায় মানুষের ভিড়। তারপর তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী পার করে মহাষষ্ঠীর বিকেল নামলেই রাস্তায় তিল ধারণের জায়গা থাকেনা।
অনেকের অবশ্য মহাষষ্ঠী আসতে আসতেই অর্ধেক কলকাতার ঠাকুর দেখা সম্পূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু সেই ছবি এ বছর অমিল। তাই অনেকেরই প্রশ্ন এ কোন মহাষষ্ঠীর সন্ধে? এমনটা তো জীবনে দেখেননি তাঁরা।
করোনার কারণে এবার দুর্গাপুজো অনেকটাই নিয়ম সর্বস্ব। প্যান্ডেল বা আলো যে একদম নেই এমনটা নয়। অনেক বড় পুজো ছোট হয়ে গেলেও তা এতটাও ছোট হয়নি যে ভিড় জমবে না।
অনেক জায়গায় থিমও উধাও হয়ে যায়নি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই থিমে জায়গা পেয়েছে করোনা। করোনা মহামারি, করোনা যোদ্ধা, পরিযায়ী শ্রমিক, সেবামূলক কাজ, এমনই বিভিন্ন বিষয় এবার পুজোর অন্যতম আকর্ষণ।
এবার কিন্তু মহাষষ্ঠীর সন্ধেয় শহর কলকাতা কার্যত ফাঁকা। প্যান্ডেল আছে। আলোও জ্বলেছে। মাইকও বাজছে। কিন্তু ওটুকুই। মানুষের দেখা নেই। যা বাস্তবে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত কমাতে আবশ্যিক ছিল।
কিন্তু এই ছবিটা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। এত বছর ধরে যে মহাষষ্ঠীর সন্ধের সঙ্গে শহরবাসী পরিচিত, সেই ছবিটাই কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। যা হয়তো পুজোর বাকি দিনগুলোর ছবিও পরিস্কার করে দিল। বরং এবার বাড়িতে থেকে টিভির পর্দায় চোখ রাখাটাতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন সকলে। যা বিশেষজ্ঞরাও চাইছিলেন।
হাইকোর্টের নির্দেশের আগে অবশ্য অনেকেই করোনাকে তোয়াক্কা না করেই পুজোর কটাদিন শহরে ঘোরার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ করার পর তাঁরাও কিছুটা পিছু হটেছেন।
তারওপর বৃষ্টির পূর্বাভাস আরও মাটি করেছে উৎসাহে। যা হয়তো কোথাও গিয়ে পুজোকে কেন্দ্র করে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনায় দাঁড়ি টানতে পেরেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এতে আখেরে মানুষের উপকারই হয়েছে।