কার্তিক ঠাকুর ফেলার মত একসময় বাড়িতে দুর্গা ফেলার রেওয়াজ ছিল
কার্তিক পুজোর সময় কার বাড়িতে কার্তিক পড়ল তা জানতে পাড়ার লোকজন উৎসুক থাকেন। এক সময় এই কলকাতায় কিন্তু বাড়িতে দুর্গা প্রতিমা ফেলারও রেওয়াজ ছিল।
কার্তিক মাসের শেষ দিন মানেই কার্তিক পুজো। সেই কার্তিক পুজোর একটা বড় আকর্ষণ হল নিঃসন্তান দম্পতিদের বাড়িতে কার্তিক ফেলার রেওয়াজ। ক্রমে ব্যস্ত জীবনের কারণে এই রেওয়াজে ভাটার টান। তবে এখনও হারিয়ে যায়নি এই সনাতনি মস্করা।
পাড়ার ছেলেছোকরাদের লক্ষ্য থাকতেন নতুন বিয়ে হওয়া বা মাত্র কয়েক বছর হয়েছে বিয়ে হয়েছে এমন দম্পতিরা। তারা রাতের অন্ধকারে কার্তিক পুজোর আগের দিন কার্তিক ঠাকুর কিনে তা ফেলে আসত এমন দম্পতিদের বাড়ির দরজায়।
পরদিন সকালে দরজা খুলে তাঁরা সেই কার্তিক দেখে রাগ করুন আর আনন্দই পান, তাঁদের পুজো করতে হত। পাড়ার ছেলেছোকরাদের খাওয়াতেও হত।
সেই রেওয়াজ আজও বেঁচে আছে। কিন্তু কার্তিক ঠাকুর ছাড়া এমন বাড়িতে ঠাকুর ফেলে যাওয়ার রেওয়াজ অন্য কোনও পুজোয় নেই। কিন্তু সেটাও ছিল এই কলকাতায়।
১৮৩২ সালের সমাচার দর্পণ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায় সে সময় বাড়িতে দুর্গা প্রতিমা ফেলারও রেওয়াজ ছিল। সাধারণত যে প্রতিমা বিক্রি হতনা সেইসব প্রতিমা যাঁরা পুজো করতেননা, তাঁদের বাড়িতে ফেলে যাওয়া হত।
এছাড়া কেউ তাঁর শত্রুর বাড়িতেও দুর্গা প্রতিমা ফেলে আসতেন। আবার মজা করে কৃপণ মানুষদের বাড়িতে ফেলা হত দুর্গাপ্রতিমা।
একবার প্রতিমা দরজায় পাওয়া গেলে সে পরিবারকে পুজো করতেই হত। প্রয়োজনে ধার করেও পুজো করতে হয়েছে অনেককে, এমনও উদাহরণ সে সময় ছিল। — তথ্যসূত্র – “সেকালের পুজো পার্বণ মেলা উৎসব” – শিবশংকর ভারতী