২ দেশের মাঝে নো ম্যানস ল্যান্ডে হয় শতাধিক বছরের পুরনো দুর্গাপুজো
২ দেশের মাঝে থাকে নো ম্যানস ল্যান্ড। যেখানে প্রবেশ করাও মানা। সেখানেই কিন্তু থাকে ৪৪টি পরিবার। হয় শতাধিক বছরের দুর্গাপুজো।
ভারত ও বাংলাদেশের মাঝে রয়েছে বিস্তীর্ণ সীমান্ত। অসমের করিমগঞ্জ জেলার গোবিন্দপুর গ্রাম এই ২ দেশের সীমান্তে পড়ে গিয়েছে। সীমান্তবর্তী হওয়া একটা জিনিস, কিন্তু এ গ্রাম ২ দেশের মাঝের নো ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে গেছে। ১৯৯৪ সালে যখন এখানে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু হয় তখন ২ দেশের কাঁটাতারের বেড়ার মাঝে পড়ে যায় এই গ্রাম।
যদিও গ্রামবাসীরা ভারতে ভোটদান করেন। কিন্তু তাঁরা নো ম্যানস ল্যান্ডের বাসিন্দা। কাঁটাতারের মধ্যে থাকায় তাঁদের ওপর হাজারো কড়াকড়ি। এমনকি গ্রামের বাইরে সন্ধেটা কেমন হয় তাও তাঁদের জানা নেই।
কারণ বিএসএফ কাঁটাতারের দরজা বন্ধ করে দেয় বিকেল হলে। খোলে পরদিন সকালে। মাঝে সন্ধে ও রাতে তাই এই গ্রাম থেকে বার হওয়া বা প্রবেশ নিষেধ। গ্রামের বাসিন্দা হলেও তাই।
তাই গ্রামের মানুষ যেখানেই থাকুন সন্ধের আগেই গ্রামে ফিরে আসেন। কারণ সন্ধে নামলে রাতে আর প্রবেশ করা যায়না গ্রামে। এছাড়াও একগুচ্ছ নিয়ম মেনে চলতে হয় গোবিন্দপুরকে।
এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও পৈতৃক ভিটে ছেড়ে ৪৪টি পরিবার যেতে নারাজ। তাঁরা এই নো ম্যানস ল্যান্ডেই থেকে যেতে চান। এত সমস্যার মধ্যেও তাঁরা কিন্তু তাঁদের গ্রামের শতাধিক বছরের পুরনো দুর্গাপুজো চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই পুজোয় আর্থিক সাহায্য দান করেন বিএসএফ জওয়ানরাও। গ্রামের ৪২টি পরিবার হিন্দু। বাকি ২টি পরিবার মুসলিম। তবে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয় হিন্দু মুসলিম উভয় পরিবারের অক্লান্ত পরিশ্রমে। এভাবেই চলছে এই পুজো।
গ্রামের মধ্যেই একটি মন্দিরে হয় এই পুজো। কেবল করোনার সময় আর্থিক সমস্যার কারণে এখানে পুজো বন্ধ ছিল। তাছাড়া পুজো কিন্তু কখনও বন্ধ হতে দেননি এই নো ম্যানস ল্যান্ডের বাসিন্দারা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা