বৃহন্নলাদের পুজোয় মা দুর্গার একদম অন্য রূপ, হয়না ভাসান
৬ বছরে পা দিল বৃহন্নলাদের দুর্গা পুজো। যা ধুমধামের সঙ্গে হয় গরিমা গৃহে। এই পুজোয় মা দুর্গার রূপ একদম অন্যরকম। এ পুজোয় মূর্তি ভাসানও হয়না।
বৃহন্নলাদের সমাজের মূল স্রোতে মিশে যাওয়ার এক বড় উদাহরণ তাঁদের ধুমধাম করে দুর্গাপুজোর আয়োজন। নিষ্ঠায় কোনও খামতি নেই। পুজো হয় যাবতীয় রীতি মেনে। বৃহন্নলাদের নিশ্চিন্ত আশ্রয় কলকাতার গরিমা গৃহে এই পুজোর আয়োজন ৬ বছরে পা দিল। এই পুজোর বেশ কয়েকটি মৌলিক দিক রয়েছে। যার একটি মা দুর্গার রূপে স্পষ্ট।
এখানে মা দুর্গা অর্ধনারীশ্বর রূপে পূজিতা হন। এই অর্ধনারীশ্বর কেন? তার উত্তরে উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, মা দুর্গার সঙ্গে মহাদেব অবিচ্ছেদ্য। কিন্তু দুর্গাপুজোয় মহাদেবকেই বড় ব্রাত্য মনে হয়। তাঁর একটি ছোট ছবি বা মূর্তি রাখা হয় ঠিকই, কিন্তু তা দুর্গার সঙ্গে মিশে থাকেনা।
কিন্তু মহাদেব ও দুর্গা অবিচ্ছেদ্য। তাই উদ্যোক্তারা অর্ধনারীশ্বর রূপে দুর্গাকে পুজো করেন। এছাড়া তাঁরা মনে করেন মহাদেব ও মা দুর্গার মিলিত শক্তিকে এখানে পুজো করা হয়।
এই পুজোর আরও একটি মৌলিক দিক হল বিজয়ার পর এই মূর্তি বৃহন্নলারা ভাসান দেন না। বরং তা একপাশে সযত্নে রাখা থাকে বছরভর।
মা দুর্গাকে ভাসান দেওয়ার মধ্যে তাঁরা এক বিচ্ছেদ দেখতে পান। এ বিচ্ছেদ বড় বেদনার তাঁদের কাছে। তাই পুজোর উদ্যোক্তারা মা-কে ভাসান না দিয়ে তাঁদের কাছেই রেখে দেন।
বৃহন্নলারা মনে করেন যদিও তাঁদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তবু বৃহত্তর অর্থে তাঁরা সমাজের মূল স্রোত থেকে এখনও বিচ্ছিন্ন। সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছেদের যন্ত্রণা তাঁদের রয়েছে। তার ওপর মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের কষ্ট তাঁরা সহ্য করতে পারবেননা। তাই তাঁরা সারাবছর মা দুর্গাকে তাঁদের কাছেই রেখে দেন।