দুর্গাপুজোয় ডাকের সাজ এসেছিল বিদেশ থেকে, নামেই লুকিয়ে আসল কথা
দুর্গাপুজোয় শোলার সাজ, ডাকের সাজ এসব কথা শোনাই যায়। এই অতিজনপ্রিয় ডাকের সাজ পুজোয় জুড়েছিল বিদেশ থেকে। ডাকের সাজ নামেই লুকিয়ে আছে তার আদি কথা।
দুর্গাপুজোয় মা দুর্গার সাজ চিরকালই নজর কাড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানাধরনের সাজে সেজে ওঠেন মা দুর্গা। তবে ঐতিহ্যবাহী সাজ বলতে যা বোঝায় তা হল ডাকের সাজ বা শোলার সাজ।
প্রধানত একচালার প্রতিমাকে এই ২ সাজে সাজিয়ে তোলার রীতি দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। ডাকের সাজ কথাটার সঙ্গে সকলে পরিচিত হলেও তার আদি ইতিহাস হয়তো একাংশের অজানা।
বাংলার মধ্যযুগে শহর কলকাতায় ছিল বাবু সমাজের দাপট। বিত্তবান এবং অত্যন্ত প্রতিপত্তিশালী এই বাবুরা অর্থব্যয়ে কার্পণ্য করতেননা। দুর্গাপুজোয় তো নয়ই। সেই সময় তাঁরা মা দুর্গাকে সাজিয়ে তোলার জন্য এক বিশেষ সাজের প্রচলন করেন। যা এখন ডাকের সাজ বলে পরিচিত।
মা দুর্গার অঙ্গভূষণ ঝলমলে করে তুলতে এই সাজে প্রধানত রূপোলী ফয়েল জাতীয় বস্তু ব্যবহার হত। যা তখন ভারতে পাওয়া যেত না। তাই অর্থবান বাবুরা তা সুদূর জার্মানি থেকে আমদানি করাতেন।
যা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হত মা দুর্গাকে। জার্মানি থেকে তা আসত ডাকে, অর্থাৎ ডাকবিভাগের হাত ধরে। পোস্টাল বিভাগ বা ডাকবিভাগে যা আসত তাকে ডাকে আসা বলা হত।
যেহেতু সেই সাজ ডাকে আসত, তাই তার নাম হয়ে গেল ডাকের সাজ। এভাবেই বাঙালির দুর্গাপুজোয় ডাকের সাজের প্রচলন হয়ে যায়।
প্রথমে অর্থবান বাবুরা ছাড়া জার্মানি থেকে এই সাজ আনানোর ক্ষমতা আর কারও ছিলনা। ক্রমে সেই সাজ অবশ্য ছড়িয়ে পড়ে। যে সাজ আজও ঐতিহ্যবাহী এক ঝলমলে দুর্গারূপকে সকলের সামনে তুলে ধরে।