পশ্চিমবঙ্গে যখন বিজয়াদশমীর প্রণাম, কোলাকুলি, মিষ্টিমুখ, শুভেচ্ছা বিনিময় চলছে, তখন দেশের বাকি অংশে চলছে দশেরা পালন। বিকেল নামার অপেক্ষা। তারপরই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাবণ দহন শুরু হয়ে যায়। এটাই পরম্পরা। এটাই দশেরার মূল আকর্ষণ। এদিনই রাবণকে বধ করেন শ্রীরামচন্দ্র। রাবণবধের সেই মুহুর্তকে প্রতি বছর দশেরা হিসাবে পালন করে থাকেন ভারতবাসী।
এদিন পাটনা, মহীশূর, দিল্লি, মুম্বই, আজমের, লখনউ, জয়পুর থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি কোণায় দশেরা পালিত হয়েছে ঐতিহ্য মেনেই। রাম সেজে ছোঁড়া তির গিয়ে লেগেছে কুম্ভকর্ণ, ইন্দ্রজিৎ এবং সবশেষে দশাননের অতিকায় পুতুলে। আর তাতেই হয়েছে প্রতীকী রাবণবধ। আতসবাজি ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু জ্বলে উঠেছে দাউদাউ করে। দর্শকদের বিশাল ভিড় উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠেছে জয় সিয়ারাম, জয় সিয়ারাম! সে ধ্বনি গুঞ্জরিত হয়েছে বিশাল ময়দান চত্বর জুড়ে।
দশেরা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির দ্বারকায় রাবণ দহনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তৃতা দেন। খারাপ অভ্যাস ত্যাগের মধ্যে দিয়ে সুন্দর ভারত গড়ার জন্য আহ্বান জানান। দেখেন রামলীলা। যেখানে রাবণকে বধ করার সেই মুহুর্তকে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেন শিল্পীরা। তারপর প্রতীকী তির ছুঁড়ে রাবণ দহন করেন প্রধানমন্ত্রী। অগণিত দর্শক সেই দৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করে রাখেন। এদিন দিল্লিতেই অন্য এক রাবণ দহন অনুষ্ঠানে হাজির হন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই বিশাল মাঠ জুড়ে রাবণের পুতুল সন্ধের মুখে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছে। আতসবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ জ্বলতে শুরু করে। এ হল অশুভের ওপর শুভের জয়। ভারতের পরম্পরা মেনে আজও এই রাবণ দহন অম্লান। নিজের ঐতিহ্য ধরে রেখে ভারতবাসী এখনও এই দিনটাতে মেতে ওঠেন দশেরা পালনে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা