ক্রমশ নোনতা হচ্ছে পানীয় জল, মাটি, বাতাস, এ কোন অশনিসংকেত
সমুদ্রের জল নোনতা হয় এ সকলের জানা। কিন্তু নদী, দিঘি, জলাশয়ের মিষ্টি জলও নোনতা হতে শুরু করেছে। নোনতা হচ্ছে বাতাস, মাটিও।
সমুদ্রের মাঝে হারিয়ে গেলে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম পানীয় জল। জলের অফুরন্ত ভাণ্ডারের মাঝে থেকেও পানীয় জল না পেয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে এমনও ইতিহাস রয়েছে। কারণ সে জল নোনতা। পানের অযোগ্য। নদী, দিঘি, জলাশয়ের জল মিষ্টি জল হিসাবে পরিচিত। তাই সেই জল পানীয় হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
কিন্তু সেই পানীয় জলও ক্রমশ নোনতা হচ্ছে। আর এত দ্রুত সেই নোনতা ভাব বাড়ছে যে তা বিজ্ঞানীদের কাছে একটি অশনিসংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য জল, মাটি, বাতাসে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য মানুষের কাজকর্মের দিকেই আঙুল তুলেছেন। লাগামছাড়া নির্মাণ, মাটিকে ভুল ভাবে ব্যবহার, নিকাশি ব্যবস্থায় দূষিত জলকে সঠিকভাবে বন্দোবস্ত না করে প্রকৃতির সঙ্গে মিশতে দেওয়া এবং এমন নানা কাজকর্মে আদপে মাটির নোনতা ভাব বেড়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণ ভাবে মানুষ নোনতা বলতে নুনকে বোঝেন। যা সোডিয়াম ক্লোরাইড। কিন্তু আরও নানা ধরনের লবণ মিশছে মাটিতে। যার মধ্যে রয়েছে লাইমস্টোন, জিপসাম, ক্যালসিয়াম সালফেট।
অনেক জায়গায় উষ্ণায়নের জন্য জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ওই জায়গার জল শুকিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে থাকা লবণ অতি ক্ষুদ্র কণা হয়ে বাতাসের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। যেসব জায়গায় বরফ পড়ে সেখানে লবণ ছড়িয়ে বরফ গলিয়ে রাস্তা সাফ করা হয়। সেখানেও সেই অতিরিক্ত লবণ বাতাস ও মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।
এভাবে বাতাসে ও মাটিতে লবণের মাত্রা বাড়ছে। এছাড়া লবণ তৈরি করা, মাটিকে নানা কাজে ব্যবহার থেকেও বাতাসে লবণের মাত্রা বাড়ছে। আবার নদী বা দিঘিতে গত ৫০ বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে লবণের মাত্রা। যা কিন্তু মানবসভ্যতার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
অবিলম্বে মিষ্টি জল, মাটি ও বাতাসে বাড়তে থাকা লবণে লাগাম না দিতে পারলে যে তা আগামী দিনে মানুষের জন্য বড় সমস্যার কারণ হতে চলেছে সে বিষয়েও সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা