জিরাফ শূন্য ৭টি দেশ, হারাতে বসেছে এই লম্বা গলার প্রাণি
তারা ১০০ বছর আগেও সংখ্যায় প্রচুর ছিল। প্রায় ১০ লক্ষ জিরাফ নিশ্চিন্তে জীবন কাটাত বিভিন্ন জঙ্গলে। কিন্তু জিরাফের সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
লম্বা গলা। বিশাল চেহারা। কিন্তু অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির যে প্রাণিটি অনেককে এখনও অবাক করে তার নাম জিরাফ। জিরাফের লম্বা গলা তার বিশেষত্ব।
এই অতিকায় প্রাণিটি কিন্তু আজ থেকে ১০০ বছর আগেও সংখ্যায় প্রচুর ছিল। হিসাব বলছে প্রায় ১০ লক্ষ জিরাফ আফ্রিকাতে নিশ্চিন্তে জীবন কাটাত বিভিন্ন জঙ্গলে। কিন্তু গত ৩০ বছরে জিরাফের সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমে গেছে। আর তা কমেই চলেছে। যা রীতিমত চিন্তায় ফেলেছে প্রাণি বিশেষজ্ঞদের।
জিরাফের সংখ্যা এতটাই হুহু করে কমছে যে জিরাফকে এখন অতি বিপন্ন প্রাণির তালিকায় জায়গা দিচ্ছে আইইউসিএন। আপাতত জিরাফকে কীভাবে বাঁচানো যায় এবং কীভাবে জিরাফের নিশ্চিন্ত জীবনযাপনের জন্য অভয়ারণ্যের বন্দোবস্ত করা যায় তা নিয়ে চিন্তিত রাষ্ট্রসংঘও। আফ্রিকার বেশ কিছু দেশে অভয়ারণ্য বানিয়ে জিরাফকে প্রাণি জগতে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা শুরু করতে বসছে বৈঠকও।
কেন এমনটা হল? কিছু বছরে কেন এভাবে কমছে জিরাফ? বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এর পিছনে রয়েছে চোরাশিকারিদের অপরিসীম লোভ।
জিরাফের মাংস, তার চামড়া, তার লেজের প্রবল চাহিদা রয়েছে। মোটা অর্থ প্রাপ্তির আশায় আফ্রিকার ঘন জঙ্গলে চোরাশিকারিদের বন্দুকের নিশানা হচ্ছে জিরাফ।
ফাঁদ পেতেও জিরাফ শিকার চলছে লুকিয়ে। সনাতনি কিছু ওষুধ তৈরিতেও জিরাফের অবদান থাকে। সেজন্যও জিরাফ শিকার হয়ে থাকে।
আফ্রিকা হল জিরাফদের নিশ্চিন্ত বেড়ে ওঠার জায়গা। আফ্রিকার প্রায় সব দেশেই জিরাফের অস্তিত্ব পাওয়া যেত। কিন্তু এখন ৭টি দেশ ইরিত্রিয়া, বুরকিনা ফাসো, গিনি, মালি, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া ও সেনেগাল থেকে জিরাফ নামক প্রাণিটি বিদায় নিয়েছে। এসব দেশে আর একটাও জিরাফ জীবিত নেই।
চোরাশিকার ছাড়াও ক্রমশ বাড়তে থাকা জনবসতি, পরিবেশে পরিবর্তন, যথাযথ আইন না থাকা, জঙ্গল কেটে পরিকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন, যথেষ্ট সচেতনতার অভাব, এমন বেশ কিছু কারণ জিরাফের এই অবস্থায় জন্য দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
আপাতত আফ্রিকার দেশগুলিকে এক ছাদের তলায় এনে বৈঠক করে জিরাফ কীভাবে রক্ষা করা যায় তার উপায় খোঁজার চেষ্টা শুরু হয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা