ডার্বি সবুজ মেরুন, মোহনবাগানের সামনে দাঁড়াতেই পারল না ইস্টবেঙ্গল
মোহনবাগানের দুরন্ত খেলার সামনে কার্যত দাঁড়াতেই পারল না ইস্টবেঙ্গল। ডার্বি হলেও তার উত্তেজনা শেষ হয়ে গেল ২৩ মিনিটের মধ্যেই। বাকিটা একতরফা মোহন দাপট।
ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে ডার্বি জিতল মোহনবাগান। গোয়ার স্টেডিয়ামে এদিন ফিকে হয়ে গেল লালহলুদ। ঝলমলিয়ে উঠল সবুজমেরুন।
পুরো খেলায় ইস্টবেঙ্গল দলটা সম্বন্ধে বলতে গেলে বলতে হয় প্রথম ১০ মিনিটের নজরকাড়া খেলা আর পরিবর্ত গোলকিপার হিসাবে নেমে শুভম সেনের চোখে পড়ার মত খেলা। এই ২টি বিষয় বাদ দিলে এদিন মাঠ জুড়ে শুধুই ছিল মোহন দাপট।
খেলা শুরুর পরই কিন্তু মনে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ছন্দে রয়েছে, তুলনায় মোহনবাগান কিছুটা ছন্নছাড়া ফুটবল খেলছে। কিন্তু খেলার ১০ মিনিট পার করতেই মোহনবাগান নিজেকে বদলাতে শুরু করে। কৌশল বদলায়। আর তার হাতে গরম ফল পায় তারা।
খেলার ১২ মিনিটের মাথায় রয় কৃষ্ণাকে বাড়ানো পাস তিনি জোড়াল শটে গোলে ঢোকাতে এতটুকু ভুল করেননি। লালহলুদ গোলকিপার অরিন্দম লাফালেও কিছু করার ছিলনা। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
১ গোল খাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল পাল্টা চাপ তৈরি করবে বলে মনে হলেও তা হয়নি। বরং মোহনবাগান ফের গোল পায় তার ২ মিনিটের মধ্যে। এবার গোল করেন মনবিন্দর সিং। কার্যত একার চেষ্টায় জালে বল জড়ান তিনি। এখানেও ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। সেইসঙ্গে ব্যর্থ গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্য। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। এটাই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য যথেষ্ট হৃদয় বিদারক ছিল।
মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল এমন এক ভাবাবেগ যা বছরের পর বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। সেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দূরে থাক কার্যত ১৪ মিনিটে খেলার ভাগ্যলিখন দেখতে পান লালহলুদ সমর্থকেরা। কিন্তু তখনও অনেক কিছু বাকি ছিল।
২৩ মিনিটের মাথায় লিস্টন কোলাসো বল নিয়ে পৌঁছে যান ইস্টবেঙ্গলের গোলের কাছে। তাঁকে দেখে অরিন্দম ভট্টাচার্য আচমকা এগিয়ে আসেন। আর সেখানেই সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান কোলাসো।
অরিন্দমকে কাটিয়ে ফাঁকা গোলে বল ঠেলে দেন তিনি। ২ গোলের দুঃখ ভোলার আগেই আর ১টি গোল হজম করতে হয় লালহলুদকে। ৩-০-তে এগিয়ে যায় সবুজমেরুন।
এই গোলের পর দেখা যায় ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার মাঠে পড়ে আছেন। তাঁকে এরপর মাঠ ছাড়তে দেখা যায়। তাঁকে জড়িয়ে ধরে, পিঠ চাপড়ে সাহস দিতে দেখা যায় মোহন ফুটবলারদের।
এরপর খেলা কিছুটা গতি হারালেও মোহনবাগানের দাপট কিন্তু মাঠে বজায় ছিল। ৩ গোল খাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া লড়াইটাও ইস্টবেঙ্গলের কাছে দেখতে পাওয়া যায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় মাঝেমধ্যেই ফেরার চেষ্টা করে ইস্টবেঙ্গল। তবে তা গোলে বল জড়ানোর মত ছিলনা। তারসঙ্গে ছিল মোহনবাগানের সুরক্ষার কঠিন দেওয়াল।
তবে এদিন ইস্টবেঙ্গল আরও গোল হয়তো খেতে পারত। বাঁচিয়ে দিয়ে যান অরিন্দমের পরিবর্ত গোলকিপার শুভম সেন। শুভম এদিন বেশ কয়েকটি অবধারিত গোল আটকে দিয়েছেন।
সেইসঙ্গে অরিন্দমের আর অন্য ম্যাচে প্রয়োজন রয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠিয়ে দিয়ে গেছেন তাঁর দুরন্ত পারফরমেন্স দিয়ে। যার জেরে মোহনবাগান এদিন খেলা জেতে ৩-০ ব্যবধানে। ডার্বি এদিন ফের সবুজমেরুন।