ফের ডার্বির রং সবুজ মেরুন, হ্যাট্রিক করে বাবার মুখ উজ্জ্বল করলেন কিয়ান
ফের মোহনবাগানের কাছে হারল ইস্টবেঙ্গল। চলতি বছরে পরপর ২টি ডার্বিতে হারল তারা। এদিন মোহনবাগানে এক নতুন তারকার জন্ম হল।
কলকাতার ফুটবল ইতিহাসে রুদ্ধশ্বাস লড়াই মানেই মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল ফুটবল যুদ্ধ। যাকে এখন মানুষ ডার্বি নামে চেনেন। আইএসএল-এ মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল দ্বিতীয়বার মুখোমুখি হল। প্রথমটা জিতেছিল মোহনবাগান। দ্বিতীয় খেলাতেও তারা হারিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গলকে।
যে খেলায় পরতে পরতে রইল চমক। মোহনবাগান পেনাল্টি নষ্ট করেও ম্যাচ জিতল ৩-১ ব্যবধানে। তাও ১ গোলে পিছিয়ে থেকে ৩টি গোল দিল তারা। যার মধ্যে আবার ২টি গোল এল ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে।
কলকাতার ফুটবলে এক অবিস্মরণীয় নাম জামশেদ নাসিরি। ফুটবল সম্বন্ধে যাঁরা একটুও খবর রাখেন তাঁরা জানেন একটা সময় ময়দান কাঁপানো ফুটবলার ছিলেন জামশেদ।
সেই জামশেদ নাসিরির ছেলে কিয়ান নাসিরি গিরি এদিন মোহনবাগানে হয়ে নেমে বাবা মুখ উজ্জ্বল করলেন। এদিন মোহন জয়ের নায়ক হয়ে রইলেন তিনি।
কিয়ানের পা থেকেই এল ম্যাচে সবুজ মেরুনের করা ৩টি গোল। তিনি কেবল দলকে জেতালেনই না, নিজে হ্যাটট্রিকও করলেন। তাও আবার ডার্বিতে।
এদিন শুরু থেকে কিন্তু মোহনবাগানের পায়ে বল বেশি ছিল। কিন্তু লাল হলুদ শিবিরের পাঁচিল টপকে মাছি গলারও উপায় ছিলনা। শক্তিশালী পাঁচিল গড়েই রক্ষণ সাজিয়ে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল।
মোহন আক্রমণ তাই বারবার গোলমুখে গিয়ে থেমেছে। কিছুতেই রক্ষণ প্রাচীর ভাঙতে পারেনি তারা। বরং ইস্টবেঙ্গল যখনই মোহন শিবিরে হানা দিয়েছে তখনই সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে কাটলেও দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতিতে কিছুটা পরিবর্তন আসে। বোঝা যায় খেলার ধরনে ২ দলই কিছুটা বদল আনে।
খেলার ৫৬ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে আসা বলে হাল্কা পা ঠেকিয়ে তাকে মোহন জালে জড়িয়ে দেন ডারেন সিডোয়েল। ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায় ১-০ ব্যবধানে।
লাল হলুদ সমর্থকদের আনন্দে বাঁধ ভাঙে। তবে কি শাপমোচন আর কিছু সময়ের অপেক্ষা? এবার পাল্টা আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় মোহনবাগান। তাতেই আসে সাফল্য।
ইস্টবেঙ্গলের সুখ মাত্র ৮ মিনিট স্থায়ী হয়। এর মাঝে অবশ্য মোহনবাগানের এদিনের একমাত্র স্ট্রাইকার উইলিয়ামস পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করেন।
৬৪ মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের তরুণ মুখ কিয়ান নাসিরি গিরি জোরাল শটে লাল হলুদের জালে বল জড়িয়ে দেন। খেলায় সমতা ফেরে।
এরপর ২ দলই একে অপরের গোলে হানা দিতে থাকে। তবে গোল আসেনি। ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার পর ৬ মিনিট অতিরিক্ত সময় ধার্য হয়। এই সময়টাই ম্যাচের সেরা মুহুর্ত বলা যেতে পারে।
কিয়ানই ফের তাঁর সপাট শটে ৯৩ মিনিটের মাথায় গোলে বল জড়িয়ে মোহনবাগানকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন। আর তার ঠিক ১ মিনিট পর ফের মোহনবাগান হানা দেয় ইস্টবেঙ্গল গোলে।
গোল লাইনের বাইরে থেকে বাঁ পায়ে জোড়াল শট নেন ফের কিয়ান। আর তা বুলেটের মত জালে জড়িয়ে যায়। কার্যত ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক অরিন্দমের দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা।
মোহনবাগান এগিয়ে যায় ৩-১ ব্যবধানে। ১ মিনিট পরই বাজে শেষ বাঁশি। ফের এদিন ডার্বির রং হয় সবুজ মেরুন। যার নায়ক হয়ে রইলেন তরুণ প্রতিভা কিয়ান নাসিরি।